করেন। তাহাতে উক্ত শিষ্য বিফলমনোরথ হইয়া ক্ষুন্ন মনে বাটী ফিরিয়া আসিতেছিলেন, পথিমধ্যে গুরুর সহিত সাক্ষাৎ হয় তাহাতে শিষ্য সমুদায় বিবরণ ব্যক্ত করিলে পর সার্ব্বভৌম মহাশয় আপনার গন্তব্য পথে গমন না করিয়া একেবারে সশিষ্যে উক্ত সরকার মহাশয়ের বাটীতে উপস্থিত হয়েন। উক্ত সরকার মহাশয় তাঁহার আগমনের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধিৎসু হইলে তিনি বলেন “তোমার সভাপণ্ডিতেরা আমার পুস্তকখানিতে ব্যাকরণদোষ ধরিয়াছেন, অতএব সেই সকল পণ্ডিতের সহিত এ বিষয়ে বিচার করিতে চাহি।” অনন্তর সার্ব্বভৌম মহাশয় উক্ত সরকার মহাশয়ের আশ্রিত পণ্ডিতমণ্ডলীর সহিত অনেক তর্ক বিতর্ক করিয়া স্বপ্রণীত পুস্তকখানি নির্ভুল প্রমাণ করিয়া লন। পরে উক্ত সরকার মহাশয় যথোচিত মূল্যে পুস্তক খানি ক্রয় করেন। একবার বৈদ্যনাথ সার্ব্বভৌম মহাশয় শ্রীরামপুরে পাদ্রী কেরী সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া বলেন যে বেদব্যাস যেমন এক লক্ষ শ্লোকে মহাভারত রচনা করিয়াছেন, আমাকে অনুমতি দেও আমি এক লক্ষ শ্লোকে ইংরাজ রাজত্ব বর্ণনা করি, কিন্তু একথার উত্তর প্রাপ্তির পূর্ব্বে সার্ব্বভৌম মহাশয় কালের করাল গ্রাসে পতিত হয়েন। সার্ব্বভৌম মহাশয় ঐ গ্রন্থ রচনা করিলে তাহা একটি পরমাদ্ভুত মহাভারত হইত তাহার সন্দেহ নাই। কোন তন্ত্রে আছে “ইংরেজা লণ্ড্রেজা সর্ব্বসংগ্রামেষ্বপরাজিতা।”
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৪৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
গ্ৰাম্য উপাখ্যান।
