মাছের ঝোল; রাত্রিতে ইংরাজীতর অথবা হিন্দুস্থানীতর আহার হইত। সকাল বিকাল দুই বেলা তীরে নামিয়া আমরা পাখী মারিতে যাইতাম। সেই পক্ষীর মাংস ভক্ষণ করা যাইত। একদিন রামগোপাল বাবু আমাকে একটি পিস্তল ছুঁড়িতে দিলেন। আমি বলিলাম “আমি পিস্তল কখন ছুঁড়ি নাই, ভয় হইতেছে পাছে হাতটা উড়িয়া যায়।” রামগোপাল বাবু বলিলেন “গেলই বা।” তখন ঐ কথা কঠোর বলিয়া বোধ হইয়াছিল, এক্ষণে তাহার অর্থ বুঝিতে পারিতেছি। আমরা ক্রমে, বঙ্গদেশের অক্সফোর্ড নবদ্বীপ পার হইয়া বিল্বগ্রাম হইতে শ্রীযুক্ত মদনমোহন তর্কালঙ্কার মহাশয়কে ষ্টীমারে উঠাইয়া লইয়া যাইবার জন্য তথায় ষ্টীমার নোঙর করিলাম। মদনমোহন তর্কালঙ্কার সে সময়ের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন। তিনি বঙ্গভাষায় একজন বলিয়া খ্যাত ছিলেন। তাঁহার প্রণীত প্রধান কবিতার সুকবি নাম বাসবদত্তা। তিনি সংস্কৃত কলেজের সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। বিটন স্কুল যখন প্রথম স্থাপিত হয়, তখন আপনার কন্যাকে উক্ত বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি করাইয়া এবং অন্যান্য প্রকারে স্ত্রীশিক্ষা বিস্তাররূপ মহৎ কার্য্যে বিটন সাহেবকে যথেষ্ট সাহায্য করিয়াছিলেন। বিটন সাহেব এজন্য তাঁহাকে বড় ভাল বাসিতেন এবং “My dear Madan” (প্রিয় মদন) বলিয়া পত্র লিখিতেন। ইনি ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় “সর্ব্ব শুভকরী” নামে পত্রিকা
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৫৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
গ্রাম্য উপাখ্যান
