করিতে লাগিল। ইহার পূর্ব্বে বাষ্পীয়পোত কখন মহানন্দার ভিতর প্রবেশ করে নাই। লোকে তাহা দেখিয়া বিস্ময়ান্বিত হইল এবং আমাদিগকে কোন শ্রেষ্ঠতর লোক হইতে সমাগত অদ্ভুত জীব মনে করিল। ষ্টীমার হইতে যখন গ্রামে কেহ দুধ কিনিতে যাইত, তখন সে গিয়া দেখিত, যে গ্রামের সমস্ত লোক পলায়ন করিয়াছে, গ্রাম শূন্য পড়িয়া আছে। একি ব্যাপার! আমরা ইহা দেখিয়া মনে করিলাম যে আমরা কলম্বস ও তাঁহার সঙ্গীর ন্যায় কোন একটা নূতন আমেরিকা আবিষ্কার করিয়াছি; ও সেই আমেরিকাবাসী ইণ্ডিয়ানগণ আমাদিগের সম্মুখ হইতে পলায়ন করিতেছে। ইহার মধ্যে এক দিন মহানন্দার তীরে আমরা রাত্রে নঙ্গর করিয়া আছি, এমন সময়ে বাঘের ডাক শুনা গেল। যখন আমরা ভোলাহাট নামক স্থানের সম্মুখে পৌঁছিলাম, তখন আমরা একটা “কড়কড়ে পানীতে” (Rapid) পড়িলাম। ষ্টীমার কোন মতে আর অগ্রসর হয় না। আমরা রামগোপাল বাবুকে বলিলাম, আর অগ্রসর হইবার আবশ্যক নাই, ঘরে ফিরিয়া যাওয়া যাক্। রামগোপাল বাবু অসমসাহসিক কার্য্য সকল করিতে বড় ভাল বাসিতেন। তিনি বলিলেন, “ফিরিয়া যাওয়া আমাদের অভিধানে লেখে না, ষ্টীমারের কলে সম্পূর্ণ জোর দিয়া অগ্রসর হইতেই হইবে। তাহাতে বইল (Boiler) ফাটিয়া আমরা যদি আকাশে উড়িয়া যাই,
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
গ্রাম্য উপাখ্যান।
