পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান ।
১১৩

তাহাতে ক্ষতি নাই।” রামগোপাল বাবু বলিতেন যে এমন অনেকবার ঘটিয়াছে যে, বন্দুকের গুলি তাঁহার শরীরের খুব নিকট দিয়া গিয়াছে, কিন্তু তাঁহাকে স্পর্শও করে নাই। তিনি বলিতেন “আমি মন্ত্রপূত জীবন ধারণ করি।” (I bear charmed life)। ষ্টীমারে পূর্ণ জোর দিবার পূর্ব্বে ষ্টীমার হালকি করিবার জন্য ষ্টীমারের অধিকাংশ জিনিষ পত্র জালিবোটে করিয়া তীরে নামান হইল। ষ্টীমার স্বকীয় কলে সম্পূর্ণ জোর পাইয়া ভয়ানক গাঢ় বাষ্পরাশি পুনঃ পুনঃ উদ্গিরণ করতঃ ঈশ্বরেচ্ছায় “কড়কড়ে পানী” কোন প্রকারে পার হইল। নদীর দুই তীরে লোকে লোকারণ্য; যেমন পার হইল অমনি রামগোপাল বাবু রামমোহন রায়ের গান ধরিলেন, “ভয় করিলে যারে না থাকে অন্যের ভয়,” কেবল “অন্যের” শব্দ পরিবর্ত্তন করিয়া “জলের” এই শব্দ ব্যবহার করিয়া গান গাইতে লাগিলেন, —“ভয় করিলে যাঁরে না থাকে জলেরই ভয়।” তৎপরে আমরা মালদহ নগরে উপস্থিত হইয়া তথাকার তদানীন্তন ডেপুটী কলেক্টর বাবুর বাসায় আতিথ্য স্বীকার করিলাম। তিনি আমাদিগকে সমাদরে তাঁহার বাসায় রাখিলেন। তথায় দুই এক দিন অবস্থিতি করিলে পরে গৌড়নগরের ভগ্নাবশেষ দেখিতে সঙ্কল্প হইল। ঐ ভগ্নাবশেষ মালদহনগর হইতে আট ক্রোশ দূরে অবস্থিত। উহা দেখিতে নিবিড় বনাকীর্ণ, আমাদিগের সঙ্গে যে কয়েকটি