পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূমিকা।
২॥৴০

কার্য্যে, দশ এগারো বৎসর অতিবাহিত করিবার পর, পুনরায় মেলেরিয়া জ্বরে স্বাস্থ্য ভগ্ন হওয়াতে বায়ু পরিবর্ত্তন উদ্দেশে কলিকাতার কার্য্য ক্ষেত্র হইতে কিছু দিনের জন্য দেওঘরে গমন করেন। এই স্থানে নষ্ট স্বাস্থ্য পুনঃ লাভ করিবার পর, তিনি কলিকাতায় পুনঃ প্রত্যাবর্ত্তনের ইচ্ছা পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। দেওঘরে কার্য্যে ব্যস্ত জীবন ক্ষেত্র হইতে অপসৃত হওয়া সত্ত্বেও, ব্রাহ্মধর্ম্ম প্রচারে, সমাজ সংস্কার চিন্তায় ও সাহিত্য সেবাব্রত হইতে তিনি কখন বিরত হয়েন নাই। দেওঘরে অবস্থান কালে তিনি কত ধর্ম্ম জিজ্ঞাসু ব্যক্তিদিগকে মধুর ও উচ্চ উপদেশ এবং ধর্ম্ম প্রাণতার দ্বারা ব্রাহ্মধর্ম্মের প্রতি আস্থাবান ও আকৃষ্ট করিয়া লইতেন, এবং সমাজ সংস্কার ব্রতে, কত লোককে যে উদ্দীপ্ত করিয়া তুলিতেন তাহার সংখ্যা নাই। বঙ্গদেশের নবীন ও প্রবীণ সাহিত্য সেবীগণ, তাঁহার সহিত সাহিত্য বিষয় আলোচনা করিবার জন্য কত সুদূর স্থান হইতে দেওঘরে উপস্থিত হইতেন। তাঁহার পদার্পণে বন্য ভূমি দেওঘর বঙ্গদেশে অল্পদিনের মধ্যে প্রসিদ্ধ হইয়া উঠিয়াছিল। তাঁহার দেওঘরের বসতবাটী, ধর্ম্ম ও জ্ঞানালোচনার সামগানে মুখরিত প্রকৃত ঋষি আশ্রমের ন্যায় পুণ্য ভূমি হইয়া উঠিয়াছিল। কত স্বদেশসেবীগণ তাঁহার নিকট উপদেশ লাভের জন্য উপস্থিত হইতেন। সুপ্রসিদ্ধ সাহিত্যসেবী বাবু বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত “আনন্দমঠ” উপন্যাস পাঠ করিয়া তিনি বঙ্কিম বাবুকে এক পত্রে আন্তরিক গভীর আনন্দ প্রকাশ পূর্ব্বক তাঁহাকে ধন্যবাদ প্রদান করিয়া লিখিয়াছিলেন, “আপনার লেখনী অমর হউক।” আনন্দমঠ পাঠ করিবার পর বন্দেমাতরম্ সঙ্গীতের, “বন্দেমাতরম্ সুজলাং সুফলাং