পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৸০
গ্ৰাম্য উপাখ্যান

নাই।” একমাত্র পুত্র-শোক-বিধুরা বিধবা কন্যাকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “সুকুমারী, তুমি যে এই নিদারুণ আঘাত এরূপ ধৈর্য্যের সহিত সহ্য করিয়া চলিতেছে, ইহাতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হইয়াছি। ইহজীবন ও ইহজীবনের সুখ দুঃখ ক্ষণসূর্য্যালোক ব্যবধানকারি দ্রুত উড্ডিয়মান মেঘের ন্যায় যে ক্ষণস্থায়ি, এই তত্ত্বের সার মর্ম্ম যে তুমি সম্যক উপলব্ধি করিতে পারিয়াছ, ইহাতে আমি অত্যন্ত সন্তোষ প্রাপ্ত হইয়াছি।” এই ঘটনার দেড় বৎসর পরে, আত্মীয়, বান্ধব, পুত্র কন্যা ও পরিবারবর্গের সেবা শুশ্রুষা, শ্রদ্ধা, ভক্তি ও সম্মানের সমাদরের মধ্যে ৭৬ বৎসর বয়সে তিনি পরলোক গমন করেন।

 যে প্রতীভার প্রদীপ্ত প্রদীপ বঙ্গদেশকে আলোকিত করিবার জন্য প্রজ্জ্বলিত হইয়াছিল, তাহা শাশ্বত ধ্রুবলোকে পুনঃ মহোজ্জ্বলরুপে প্রজ্জ্বলিত হইবার জন্য অদৃশ্য হইল। তাঁহার মৃত্যুতে সমগ্র বঙ্গদেশ গভীর শোক প্রকাশপূর্ব্বক তাঁহার প্রতি আন্তরিক গভীর সম্মান প্রদর্শন করিয়াছিল।