ভদ্র লোকের ছেলে কিছু খাইতে পাইব না, ইহা কি ভাল দেখায়? তোরা অধিকাংশ নে, আমাদের কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ দে তাহা হইলেই আমাদিগের হইবে।” ইহা অপেক্ষা ন্যায়সঙ্গত কথা আর কি হইতে পারে? তাঁহারা এরূপ ন্যায়সঙ্গত কার্য্যের সহিত দারগার কোন সম্বন্ধ আছে ইহা স্বপ্নের অগোচর মনে করিয়া ত্বরিতানন্দের দম মারত (পাঠকবর্গ “মারত” শব্দের রত অংশটুকু “রত” শব্দের ন্যায় উচ্চারণ করিবেন) নির্ব্বাণ-সুখ উপভোগ করিতেন। এক দিন প্রাতে দারগা সুরথাল করিতে আসিয়াছে ইহা হঠাৎ শুনিয়া তাঁহারা নির্ব্বাণ-নিদ্রা হইতে জাগরিত হন। ইহাঁরা যোগ সাধনে অন্যান্য স্থানের যোগী অপেক্ষা অধিক অগ্রসর হইয়াছিলেন। কলিকাতার কোন যোগাশ্রমে একটী নরহত্যা হইয়াছিল, কিন্তু যোগীরা সে হত্যাকার্য্যে লিপ্ত ছিলেন না। তাঁহারা শুনিলেন যে মাজিষ্ট্রেট সাহেব তাহাদিগের আড্ডায় সুরথাল করিতে আসিবেন। তাঁহারা মনে করিলেন যে সুরথালের অর্থ সুর ও তালে মাজিষ্ট্রেটের নিকট সাক্ষী দেওয়া। এই মনে করিয়া তাঁহারা ঘুঙ্গুর পায়ে দিয়া ও মন্দিরা হাতে করিয়া সজ্জিত হইয়া রহিলেন। সাহেব আসিয়া যখন জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমরা জগবন্ধু বোসের হত্যার বিষয় কিছু জান?” তখন তাঁহারা দণ্ডায়মান হইয়া
“জগবন্ধু বোসকে জানিনে ও সাহেব জানিনে
জানিনে, শুনিনে, চিনিনে ও সাহেব চিনিনে॥”