”যখন সকল রোগের সৃষ্টি করিলেন, তখন বায়ু রোগেরও সৃষ্টি করিলেন, কিন্তু রায়ুরোগকে প্রবল পরাক্রান্ত অর্থাৎ মারাত্মক করিলেন না, তাহাতে বায়ুরোগ ক্ষুব্ধ হইয়া করযোড়ে ব্রহ্মার নিকট বলিলেন, “ঠাকুর! আমার কি দুষ্কৃতি যে সকল রোগকে আপনি প্রবল পরাক্রান্ত করিলেন কিন্তু আমাকে করিলেন না। অন্য রোগে মানুষ মারিয়া ফেলিতে পারে, কিন্তু আমি তাহা পারি না। ব্রহ্মা উত্তর করিলেন, “বা! হে! তুমি যে শরীরে প্রবেশ করিবে: সে সর্ব্বদাই মরিয়া থাকিবে। তাহার আর মৃত্যুর আবশ্যক করে না।” যতই জগতে সভ্যতা বৃদ্ধি হইতেছে ততই মানসিক পরিশ্রমের আতিশয্যজনিত এই রোগের বৃদ্ধি হইতেছে। আমরা “ইংরাজিতে Recreations of a Country Parson নামক একখানি পুস্তক পড়িয়াছি। ঐ গ্রন্থের রচয়িতা এক জন পাদ্রি। তাহাতে লেখক বলিয়াছেন যে ইংলণ্ডে এই রোগ বিলক্ষণ বৃদ্ধি হইতেছে। তিনি লিখিয়াছেন যে এই রোগগ্রস্ত তাঁহার কোন বন্ধু পাছে কোন মন্দ খবর পান বলিয়া ডাকের চিঠি খুলিতে ভয় করিতেন। এই রোগগ্রস্ত তাঁহার আর এক বন্ধু একবার রেলের গাড়িতে যাইবার সময় ঠিকানায় গাড়ী পৌঁছিলে টিকিটকালেক্টর তাঁহার নিকট টিকিট চান, জামার পকেটে শীঘ্র টিকিট না পাওয়াতে বেচারা কাঁপিতে আরম্ভ করিল।
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
গ্ৰাম্য উপাখ্যান।
