স্পর্শিতে পারে না। রামপ্রসাদ বসু যাহা উপার্জ্জন করিতেন তাহা সমস্তই দান ধ্যানে ব্যয় করিতেন। বাদলগ্রামের ব্রাহ্মণেরা ঢাকায় গিয়া তাঁহার নিকট হইতে বিলক্ষণ হাত মারিয়া লইয়া আসিতেন। রামপ্রসাদ বসু স্বর্ণদানে অধিক পুণ্য আছে শাস্ত্রীয় এই বাক্যানুসারে বাহ্মণদিগকে স্বর্ণ অর্থাৎ মোহর দান করিতে বড় ভাল বাসিতেন। খড়ো বাড়ী; স্ত্রীর হাতে রূপার পৈচে, কিন্তু প্রত্যহ বাদলগ্রামের বাটীতে ও ঢাকার বাসায় অনেক লোককে অন্নদান করা হইত। যাহাতে কেবল বাড়ীর লোকে ঘি না খাইয়া সকল লোকে ঘি খাইতে পারে এই জন্য পাক করা রাশীকৃত অন্নের উপর একেবারে ঘি ঢালিয়া দেওয়া হইত। সে কালের লোকের বদান্যতা অপরিমিত আকার ধারণ করিত, এবং পাত্রাপত্র বিবেচনা করিয়া নিয়োজিত হইত না বটে তথাপি তাহা যে তাঁহাদিগের ঔদার্য্য প্রকাশ করে তাহার সন্দেহ নাই। রামপ্রসাদ বসুর দেওয়ান হইবার অনেক অগ্রে ঢাকার পরমিট সংস্থাপিত হইয়াছিল। তাঁহার সময়ে তদ্দ্বারা গবর্ণমেণ্টের উপরে বর্ণিত অভিপ্রায় সংসাধিত হইলে তাহা উঠাইয়া দেওয়া হয়। পরমিট উঠিয়া গেলে কর্ম্ম যাওয়াতে রামপ্রসাদ বসু বাটীতে বসিয়া থাকিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। কর্ম্ম যাইবার পর তিনি যখন বাদলগ্রামের বাটীতে থাকিতেন তখন সর্ব্বদাই ঢিলে পাজামা, মেরজাই ও কাবা পরিয়া বসিয়া থাকিতেন। এক্ষণে যেমন
পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রাম্য উপাখ্যান
৪৫
