পাতা:গ্রাম্য উপাখ্যান - রাজনারায়ণ বসু.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্ৰাম্য উপাখ্যান।
৫৩

কাপ্তেনের কাজ করিয়া বড় মানুষ হইয়াছিলেন। যোড়াসাঁকোর কমল বসু নামক কোন ব্যক্তি পোর্তুগিজ কাপ্তেনের কাজ করাতে তাঁহাকে ফিরিঙ্গি কমল বসু বলিয়া লোকে ডাকিত। কামরা প্রভৃতি দুই একটী পোর্তুগিজ শব্দ বাঙ্গালা ভাষায় প্রবিষ্ট হইয়াছে।

 রামসুন্দর বসু উল্লিখিত রূপে নিজে গ্রামের অনেক অনেক উপকার সাধন করিয়া ইংরাজী ১৮২৪ সালে গতাসু হয়েন। ঐ শালে বঙ্গদেশে ওলাউঠায় বড় মড়ক হয়। এই মড়কের সময় বাদল গ্রামের কতকগুলি ষণ্ডার প্রত্যহ খিচুড়ি ও পাঁঠা খাইবার ধুম লাগিয়াছিল। সে সকল ষণ্ডারা অক্ষতশরীরে মড়ক হইতে অব্যাহতি পাইয়াছিল। আর যাহারা পরিমিতাহারী ছিল তাহাদিগের মধ্যে অনেকে কালগ্রাসে পতিত হইল। কিন্তু তাহাদিগের ন্যায় ডাংপিঠে লোকের দৃষ্টান্ত সাধারণের অনুকরণীয় হইতে পারে না। রামসুন্দর বসু আহারের বিষয়ে অতি সাবধান ছিলেন। দুই বেলা মুগের ডাল ও মাছের ঝোল ব্যতীত তাঁহার অন্য কোন আহারীয় বস্তু সহ্য হইত না। গ্রামে ওলাউঠার মড়ক দুই এক মাস স্থগিত হইয়াছে এমন সময়ে বৃদ্ধের কিরূপ কুমতি গেল, তিনি অল্প পরিমাণে অরহর দাল ও কঁকড়া খাইলেন; তাহাতেই তাঁহার ঐ রোগের উৎপত্তি হইয়া তাঁহার মৃত্যু হয়। তিনি মরিবার সময় এই উপদেশ দিয়াছিলেন;— “আমাদিগের বংশে কেহ যেন অরহর দাল