এই সভার নাম দেওয়া যাক খামখেয়ালী। ঠিক হল প্রত্যেক সভ্যের বাড়িতে মাসে একটা খামখেয়ালীর খাস মজলিস হবে, আর সভ্যেরা তাতে প্রত্যেকেই কিছু না কিছু পড়বেন। প্রত্যেক অধিবেশনের শেষে রবিকাকা একটা খাতায় নিজের হাতে বিবরণী লিখে রাখতেন। সেই খাতাটি আমি রথীকে দিয়েছি, দেখো তাতে অনেক জিনিস পাবে।
খাস মজলিসের কর্মসূচী যতটা মনে পড়ে এইভাবে লেখা থাকত, একটা নমুনা দিচ্ছি—
১৩০৩
স্থান জোড়াসাঁকো।
নিমন্ত্রণকর্তা—শ্রীবলেন্দ্রনাথ ঠাকুর
অনুষ্ঠান। শ্রীগগনেন্দ্রনাথ কর্তৃক ‘অরসিকের স্বর্গপ্রাপ্তি’ আবৃত্তি। শ্রীরবীন্দ্রনাথ কর্তৃক ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ ও ‘মানভঞ্জন’-নামক গল্প পাঠ। গোঁসাইজির গান ও তাঁহার দাদার সংগত। গীতবাদ্য।
আহার। ধূপধুনা রসুনচৌকি সহযোগে তাকিয়া আশ্রয় করিয়া রেশমবস্ত্রমণ্ডিত জলচৌকিতে জলপান।
অভ্যাগতবর্গ। শ্রীযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশ
- শ্রীযুক্ত অতুলপ্রসাদ সেন
- শ্রীযুক্ত অমিয়নাথ চৌধুরী
- শ্রীযুক্ত সুধীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- শ্রীযুক্ত অরুণেন্দ্রনাথ ঠাকুর
অভ্যাগত আরো অনেকেই ছিলেন—শ্রীযুক্ত উমাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত সতীশরঞ্জন দাশ, শ্রীযুক্ত মনোমোহন ঘোষ, শ্রীযুক্ত মহিমচন্দ্র বর্মা, শ্রীযুক্ত করুণাচন্দ্র সেন, শ্রীযুক্ত নীরদনাথ মুখোপাধ্যায়। এঁরা অনেকেই নিমন্ত্রিত হিসেবে আসতেন।
খাস মজলিসে আহারও আমাদের এক-এক বার এক-এক ভাবে সাজিয়ে দেওয়া হত। কোনো বার ‘ফরাসে বসিয়া প্লেটপাত্রে মোগলাই খানা’, কখনো ‘টেবিলে জলপান’, কোনো বার বা ‘সাদাসিদে বাংলা জলপান’।
১১১