পাতা:ঘরোয়া.djvu/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বল্‌ তো! এক হাতে সন্দেশের ঝুড়ি, আর-এক হাতে খেতে খেতে স্টেজে ঢুকছি, রবিকাকার সঙ্গে সমানে সমানে কথা কইছি, প্রায় ইয়ার্কি দিচ্ছি খুড়ো-ভাইপোতে। প্রথম প্রথম বড়ো সংকোচ হত, হাজার হোক রবিকাকার সঙ্গে ও-রকম ভাবে কথা বলা, কিন্তু কী করব—অভিনয় করতে হচ্ছে যে। কথা তো সব মুখস্থ ছিলই, তার উপর আরো বানিয়ে টানিয়ে বলে যেতে লাগলুম। রবিকাকা আর থৈ পান না। আমাদের সেই অভিনয় দেখে গিরিশ ঘোষ বলেছিলেন, এ-রকম অ্যাক্‌টার সব যদি আমার হাতে পেতুম তবে আগুন ছিটিয়ে দিতে পারতুম।

 একদিন রবিকাকা পার্ট ভুলে গেছেন, স্টেজে ঢুকেই এক সিন বাদ দিয়ে ‘কী হে তিনকড়ি’ বলে কথা শুরু করে দিলেন। আমি চুপিচুপি বলি, বাদ দিলে যে রবিকাকা, প্রথম সিনটা। তা, তিনি কেমন করে বেশ সামলে গেলেন।

 জ্যোতিকাকা করেছিলেন আরো মজার—পার্ক স্ট্রীটে কী একটা প্লে হচ্ছে, স্টেজে ঢুকেছেন, ঢুকে নিজের পার্ট ভুলে গেছেন। তিনি সোজা উইংসের পাশে গিয়ে সকলের সামনেই জিজ্ঞেস করলেন, কী হে, বলে দাও-না আমার পার্টটা কী ছিল, ভুলে গেছি যে।

 এই তো গেল নানা ইতিবৃত্ত।

 কিছুকাল বাদে খামখেয়ালীও উঠে যায়। কেন যে উঠে যায় তার একটা গল্পও আছে। বলব তোমাকে সব? কী জানি শেষে না আবার বন্ধুমানুষ কেউ কেউ ক্ষুণ্ণ হন। যাক গে, নাম বলব না কারুরই, গল্প শুনে রাখো। আমার আর কয়দিন, যা-কিছু আমার কাছে আছে সব তোমার কাছে জমা দিয়ে যাই। অনেক কথাই কেউ জানে না, আমি চলে গেলে আর জানবার উপায়ও থাকবে না। দরকার মনে করো যদি জানিয়ো তাদের আমি তোমার কাছে বলেই খালাস; এর পর তোমার যা ইচ্ছে কোরো।

 কী বলছিলুম যেন, খামখেয়ালী উঠে যাবার কথা, কেন উঠে গেল। বলি শোনো।

১১৪