দারোগা। দেখুন হোসেন সাহেব, এ পর্য্যন্ত ওস্মান যেরূপ অত্যাচার করিয়া আসিতেছে, তাহাতে উহার প্রতি কাহার দয়া হইতে পারে? আপনি ত অনেক দিবস হইতে গোফুর খাঁর নিকট কর্ম্ম করিয়া আসিতেছেন; বলুন দেখি, তাঁহার প্রজাগণের মধ্যে কোন ব্যক্তি ওস মানের অত্যাচারে প্রপীড়িত হইতে বাকী আছে। বলুন দেখি, কয়জন লোক আপনার জাতি-ধর্ম্ম বজায় রাখিয়া, তাঁহার জমিদারীর মধ্যে বাস করিতে সমর্থ হইয়াছে। বলুন দেখি, কতগুলি স্ত্রীলোক তাঁহার জমিদারীর মধ্যে বাস করিয়া তাহাদিগের সর্ব্বপ্রধান-ধর্ম্ম সতীত্ব রক্ষা করিতে সমর্থ হইয়াছে। যাহার এই সকল কার্য্য, তাহাকে আপনি এই বিপদ হইতে রক্ষা করিতে চাহেন। স্ত্রীলোকের ধর্ম্ম নষ্ট করা ব্যতীত যাহার অপর আর কোন চিন্তা নাই, সুন্দরী স্ত্রীলোককে কোন গতিতে তাহার পিতা, মাতা, ভ্রাতা বা স্বামীর নিকট হইতে অপহরণ করিবার যাহার সর্ব্বদা মানস, আপনার পাশব বৃত্তি চরিতার্থ করিবার নিমিত্ত যে ব্যক্তি সকল কার্য্যই অনায়াসে করিতে পারে, আপনি তাহার প্রাণ রক্ষার নিমিত্ত আমাকে অনুরোধ করিবেন না। তাহাকে এই মোকদ্দমা হইতে বাঁচাইবার কথা দূরে থাকুক, তাহাকে সাহায্য করিবার নিমিত্ত অতি সামান্য মাত্র চেষ্টা করিলেও, তাহাতে মহাপাতক হয়। তাই বলি, আপনি আমাকে এরূপ অনুরোধ করিবেন না। সহস্র সহস্র মুদ্রা প্রদান করিলেও, এ কার্য্য আমার দ্বারা কোনরূপেই হইবে না।
হোসেন। আচ্ছা মহাশয়! ওস্মানই যেন মহাপাতকী, কিন্তু তাহার বৃদ্ধ পিতার অপরাধ কি? পুত্ত্রের অপরাধে পিতাকে দণ্ড দিতে প্রবৃত্ত হইয়াছেন কেন?