পাতা:ঘর-পোড়া লোক (মধ্যম অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
দারােগার দপ্তর, ৭৫ম সংখ্যা।

 এইরূপ কথাবার্তার পর হোসেন ষাট টাকা প্রদান করিয়া তাঁহাদিগের সহিত কথা কহিবার আদেশ পাইলেন। কিন্তু সেই সময় বিশেষ কোনরূপ কথা কহিবার অবকাশ পাইলেন। তাঁহাদিগকে তৎক্ষণাৎ এক্কার উপর আরোহণ করিতে হইল। হোসেনও আপন এক্কায় গিয়া আরোহণ করিলেন। এক্কায় আরোহণ করিবার সময় হোসেন কেবলমাত্র তাহাদিগকে কহিলেন, “জজসাহেব আপনাদিগের প্রাণদণ্ডের আদেশ প্রদান করিয়াছেন বলিয়া যে, আপনাদিগের প্রাণদণ্ড হইবেই, তাহা আপনারা মনে করিবেন না। আপনার উপার্জিত বিষয়ের এক পয়সামাত্র অবশিষ্ট থাকিতে, কোনরূপেই আমি আপনাদিগের প্রাণদণ্ড হইতে দিব না। টাকার যথেষ্ট সংগ্রহ করিয়া আমি সঙ্গেই রাখিয়াছি। হাইকোর্ট হইতে যেরূপ উপায়ে হউক, এই হুকুম রদ করাইব। ঈশ্বর যদি একান্তই বিমুখ হন, হাইকোর্ট হইতে যদি কিছু করিয়া উঠিতে না পারি, তাহা হইলে ছোট লাটকে ধরিয়া হউক, বড় লাটকে ধরিয়া হউক, বিলাত পর্যন্ত লড়িয়া হউক, কোন না কোনরূপে আপনাদিগকে অব্যাহতি প্রদান করাইব।”

 হোসেনের কথা শুনিয়া গোফুর ও ওসমান কেবল এইমাত্র কহিলেন, “দেখুন, ভরসার মধ্যে ঈশ্বর?”

 ইহার পরেই এক্কা সকল সেই স্থান হইতে চলিল। এক্কাচালক অশ্বগণকে সবলে কষাঘাত করিতে লাগিল। প্রহারের ভয়ে অশ্বগণ দ্রুতবেগে গমন করিতে লাগিল। দুই ঘণ্টার পথ একণ্টায় চলিতে লাগিল।

________