পাতা:ঘর-পোড়া লোক (মধ্যম অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঘর-পােড়া লােক।

হইতে সুদূর মফঃস্বলে অবস্থান করিতেছিলেন। যখন যে গ্রামে বিচারক উপস্থিত হইতেছিলেন, সেই সময় সেই গ্রামেই আপন কাছারি করিয়া মোকদ্দমার বিচারও করিয়া আসিতেছিলেন।

 যে দিবস গফুর খাঁ এবং তাঁহার পুত্র ওসমানের এই হত্যাপরাধ-বিচার আরম্ভ হইল, সে দিবস একটা নিতান্ত ক্ষুদ্র পল্লিগ্রামের ভিতর জজসাহেবের তাম্বু পড়িয়াছিল। সুতরাং সেই স্থানেই এই মোকদ্দমার বিচার আরম্ভ হইল।

 এলাহাবাদ হাইকোর্ট হইতে উকীল কৌন্সলি আনাইয়া এই মোকদ্দমায় দোষ-ক্ষালনের যতদুর উপায় হইতে পারে, হোসেন প্রাণপণে তাহার চেষ্টা করিলেন; কিন্তু কিছুতেই আপনার মনোবাঞ্চা পূর্ণ করিতে সমর্থ হইলেন না। সরকারী উকীল মোকদ্দমার অবস্থা জজসাহেবকে উত্তমরূপে সর্বপ্রথম বুঝাইয়া দিবার পর হইতেই, জজসাহেবের মনে কেমন এক বিশ্বাস হইয়া গেল যে, আসামী পক্ষীয় উকীল কৌন্সলি অনেক চেষ্টা করিলেও, তাঁহার মন হইতে সেই বিশ্বাস অপনোদন করিতে পারিলেন না। তিন দিবস পর্য্যন্ত এই মোকদ্দমার সাক্ষিগণের এজাহার গৃহীত হইল। তাহাদিগের উপর যথেষ্ট জেরা হইল। উভয় পক্ষীয় উকীল কৌন্সলিগণ স্বপক্ষে সাধ্যমত বক্তৃতাদি করিতে ক্রটি করিলেন না; কিন্তু কিছুতেই আসামীদ্বয়ের পক্ষে কোনরূপ উদ্ধারের উপায় লক্ষিত হইল না।

 জজসাহেব এই মোকদ্দমার রায় প্রদান করিবার কালীন কহিলেন, “আসামীগণ! তিন দিবস পর্য্যন্ত বিশেষ যত্ন ও মনোযোগের সহিত, এই মোকদ্দমার সমস্ত ব্যাপার আমি উত্তম রূপে শ্রবণ করিয়াছি, এবং তোমাদিগের পক্ষীয়, সুশিক্ষিত