পাতা:ঘর-পোড়া লোক (শেষ অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঘর-পােড়া লোক।
২৩

যাহা করিবেন বলিয়াছেন, কার্য্যে ঠিক তাহাই করিয়াছেন। এরূপ অবস্থায় ইহার কথায় একবারে অবিশ্বাসও করিতে পারি না। আর অনেক টাকা দিয়া একবারেই বা বিশ্বাস করি কি প্রকারে? এতদিবস সদভাবে কার্য্য করিয়াছেন বলিয়াই যে, এখন অসদভাবে কার্য্য না করিবেন, তাহারই বা প্রমাণ কি? গোফুর ও ওসমান উভয়েই জীবন পরিত্যাগ করিতে বসিয়াছেন, তাঁহাদিগের নিকট হইতে শেষ অবস্থায় এইরূপ অর্থ গ্রহণ করিলে, উহার প্রতিবিধানের আর কোন উপায়ও থাকিবে না। উহাদিগের উভয়েরই জীবন শেষ হইলে উহাদিগের পরিবারবর্গ যে অর্থ সাহায্যে অনায়াসেই জীবনযাপন করিতে সমর্থ হইতেন, সেই অর্থও কি অতঃপর এইরূপে নষ্ট করিব? বড়ই গোলযোগের কথা!

 মনে মনে এইরূপ ভাবিতে ভাবিতে যে স্থানে গোফুর খাঁ ও ওসমান খাঁ আবদ্ধ অবস্থায় ছিলেন, সেই স্থানে গমন করিলেন; কিন্তু সেই হাজত-গৃহের আসামীদ্বয়কে যে ব্যক্তি পাহারা দিতেছিল, সে তাহাকে উহাদিগের সহিত সাক্ষাৎ করিতে, বা কথা কহিতে দিল না। তখন হোসেন অনন্যোপায় হইয়া পুনরায় দারোগা সাহেবের নিকট আগমন করিলেন ও তাহাকে কহিলেন, “যাহার পাহারা আছে, সেই প্রহরী আমার মনিবদ্বয়ের সহিত আমাকে কোনরূপে কথা কহিতে, বা তাঁহাদিগের সহিত সাক্ষাৎ করিতে কোনরূপেই দিল না।”

 হোসেনের এই কথা শুনিয়া দারোগা সাহেব সেই প্রহরীকে ডাকাইলেন ও তাহাকে বলিয়া দিলেন, “আসামীদ্বয়ের সহিত