পাতা:ঘর-পোড়া লোক (শেষ অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারােগার দপ্তর, ৭৬ম সংখ্যা।

 গোফুর খাঁ ওসমান সেইরূপ একটা হাজত-গৃহের ভিতর আবদ্ধ হইলেন। সেই সময় হোসেন তাঁহাদিগের সহিত কথাবার্তা কহিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিলে, তাহার সমভিব্যাহারী সেই প্রহরী কহিল, “যে পর্য্যন্ত আসামী থানার ভিতর থাকিবে, সেই পর্যন্ত আসামী সম্বন্ধে কোন কথা বলা আমাদিগের ক্ষমতার অতীত। এখন যদি আপনি আসামীদ্বয়কে কিছু বলিতে চাহেন, বা উহারা আপনাকে কিছু বলিতে চাহেন, তাহা হইলে এখন এই থানায় কে কর্মচারী উপস্থিত আছেন, তাঁহার আদেশ লইবার প্রয়োজন। কারণ, যে পর্যন্ত আসামীদ্বয় থানার ভিতর থাকিবেন, সেই পর্য্যন্ত সেই আসামীদ্বয়ের সহিত আমাদিগের কোনরূপ সংস্রব নাই। এখন সেই আসামীদ্বয় সম্বন্ধে যাহা কিছু জবাবদিহি, তাহা এই থানার উপস্থিত কর্মচারীকে করিতে হইবে।”

 প্রহরীর নিকট হইতে এই কথা শুনিয়া হোসেন ভাবিলেন, এ বড় মন কথা নহে। আসামীদ্বয়ের সহিত কথা কহিবার নিমিত্ত আমি একবার উহাদিগকে অর্থ প্রদান করিয়াছি; কিন্তু এখন দেখিতেছি, আমি সেই অর্থ বৃথা নষ্ট করিয়াছি। ইহাদিগের সহিত যদি আবার কথা কহিবার ইচ্ছা প্রকাশ করি, তাহা হইলে এই থানায় এখন যে কর্মচারী উপস্থিত আছেন, তিনি যে আবার কত অর্থ প্রার্থনা করিবেন, তাহাই বা এখন কে বলিতে পারে? এরূপ ভাবে নিরর্থক কতবার অর্থ নষ্ট করা যাইতে পারে? ইহাদিগের সহিত এখন আর কোন কথাই করিব না। কল্য প্রাতঃকালে প্রহরীগণ যখন উঁহাদিগকে থানা হইতে