সাপ্তাহিক কাগজগুলির পুজার সংখ্যা বাহির হইয়াছে; সুতরাং আমাদের হাড়কাঠ তৈরি ছিল, রক্তপাতের ত্রুটি হয় নাই। শাস্ত্রে স্ত্রী-পশু-বলি নিষেধ, কিন্তু মানুষের বেলায় ঐটেতেই সব চেয়ে উল্লাস। কাগজে দামিনীর স্পষ্ট করিয়া নাম ছিল না, কিন্তু বদনামটা কিছুমাত্র অস্পষ্ট যাতে না হয় সে কৌশল ছিল। কাজেই দূরসম্পর্কের মাসির বাড়ি দামিনীর পক্ষে ভয়ংকর আঁট হইয়া উঠিল।
ইতিমধ্যে দামিনীর বাপ-মা মারা গেছে, কিন্তু ভাইরা কেহ কেহ আছে বলিয়াই জানি। দামিনীকে তাদের ঠিকানা জিজ্ঞাসা করিলাম; সে ঘাড় নাড়িল, বলিল, “তারা বড়ো গরিব।”
আসল কথা, দামিনী তাদের মুশকিলে ফেলিতে চায় না। ভয় ছিল, ভাইরাও পাছে জবাব দেয়, ‘এখানে জায়গা নাই’। সে আঘাত যে সহিবে না। জিজ্ঞাসা করিলাম, “তা হইলে কোথায় যাইবে?”
দামিনী বলিল, “লীলানন্দস্বামীর কাছে।”
লীলানন্দস্বামী! খানিকক্ষণ আমার মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না। অদৃষ্টে এ কী নিদারুণ লীলা।
বলিলাম, “স্বামীজি কি তোমাকে লইবেন।”
দামিনী বলিল, “খুশি হইয়া লইবেন।”
দামিনী মানুষ চেনে। যারা দলচরের জাত মানুষকে পাইলে সত্যকে পাওয়ার চেয়ে তারা বেশি খুশি হয়। লীলানন্দস্বামীর ওখানে দামিনীর জায়গার টানাটানি হইবে না এটা ঠিক।কিন্তু—