“প্রথম, তিনি আমার আপন মাসি নন; তার পরে, তাঁর কিসের দায় যে তিনি আমাকে তাঁর ঘরে রাধিবেন।
“যাতে তোমার খরচ তাঁর না লাগে আমরা তার—”
“দায় কি কেবল খরচের। তিনি যে আমার দেখাশোনা খবরদারি করিবেন সে ভার তাঁর উপরে নাই।”
“আমি কি চিরদিনই সমস্তক্ষণ তোমাকে আমার সঙ্গে রাখিব।”
“সে জবাব কি আমার দিবার।”
“যদি আমি মরি তুমি কোথায় যাইবে।”
“সে কথা ভাবিবার ভার আমার উপর কেহ দেয় নাই। আমি ইহাই খুব করিয়া বুঝিয়াছি, আমার মা নাই, বাপ নাই, ভাই নাই, আমার বাড়ি নাই, কড়ি নাই, কিছুই নাই, সেইজন্যই আমার ভার বড়ো বেশি; সে ভার আপনি সাধ করিয়াই লইয়াছেন; এ আপনি অন্যের ঘাড়ে নামাইতে পারিবেন না।”
এই বলিয়া দামিনী সেখান হইতে চলিয়া গেল। গুরুজি দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়িয়। বলিলেন, “মধুসূদন!”
একদিন আমার প্রতি দামিনীর হুকুম হইল তার জন্য ভালো বাংলা বই কিছু আনাইয়া দিতে। বলা বাহুল্য, ভালো বই বলিতে দামিনী ‘ভক্তিরত্নকর’? বুঝিত না এবং আমার ’পরে তার কোনোরকম দাবি করিতে কিছুমাত্র বাহিত না। সে একরকম করিয়া বুঝিয়া লইয়াছিল যে, দাবি করাই আমার প্রতি সব চেয়ে অনুগ্রহ করা। কোনো কোনো গাছ আছে যাদের