পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ চলিতেছে। নিজের সম্বন্ধে নিজে সে কখনো এভাবে চিন্তা করে নাই। যখন এ বিষয়ে কিছু ভাবিয়াছে, স্থূল বাস্তব জগতের আপেক্ষিকতার মাপকাঠিতে বিচার করিয়া বুঝিতে চাহিয়াছে, ব্যাপারখানা কি। নিজের সম্বন্ধে যত কেন জাগিযাছে, তার সবগুলির জবাব খুজিয়াছে যে অভিধানে শুধু সাধারণ চলতি মানে পাওয়া যায়। মুদীর হিসাবে যেন সুখ-দুঃখের হিসাব কষিয়াছে। ভূমিকম্পের কারণ খুজিয়াছে মাটির উপরে। আরও যে অনেক উষ্ণ গহন স্তর আছে মাটির নীচে এ যেন সে ভুলিয়াই গিয়াছিল। আজ সবসী মনে পড়াইয়া দিয়াছে। গভীর কৃতজ্ঞতায় অনেকদিন পরে রাজকুমারের হৃদয়গ্ৰন্থিতে স্রাব হয় চোখের জলের মত নোনতা সুস্বাদু রসের, শুকনো মন একটু ভিজিয়া ওঠে । সরসী বলিল, এত বড় হলে বসতে ভাল লাগছে না। ওপরে যাবে ? ー5び団| I উপরে দু’টি পাশাপাশি ঘর সরসীর, একটিতে সে বসে, অপরটিতে শোয়। মাঝখানে একটি দরজা আছে, ঘর দু'টির ব্যবধান বজায় রাখিতে দরজাটি সে অধিকাংশ সময় বন্ধ করিয়া রাখে, সামনের বারান্দা ঘুরিয়া যাতায়াত করে এঘর হইতে ওঘরে। বসিবার ঘরে রাজকুমারকে বসাইয়া সে বাহিরে চলিয়া গেল। একপাশে একটি চারকোণা টেবিলে সরসী লেখাপড়া করে, তার সভাসমিতির কাগজপত্রেই টেবিলেব অর্ধেকটা ভবিয়া আছে। ছোট একটি শেলফে বাছা বাছা বই, প্রত্যেকটি বই রাজকুমারের পড়া। নিবিচারে ভালমন্দ সব বই পড়ার সময় সরাসীর হয় না। রাজকুমারের সঙ্গে তাই তার বন্দোবস্ত আছে, রাজকুমার নিজে পডিয়া যে সব বই তাকে পড়িতে বলে শুধু সেই বইগুলিই সে পড়ে—তাব জ্ঞান বুদ্ধির আয়ত্তের বাহিরের বইগুলি ছাড়া । এঘরে প্রায়ই অনেক মেযে জড়ো হয়, সোফা চেয়ারে ঘরটি একটু ঠাসিয়া ফেলিতে হইয়াছে।