পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চক্ষুকোণ tor --তুমি আমায় কখনো অপমান করনি। -করিনি ? হাজারবার করেছি। অন্য কেউ হলে--রাগের মাথায় কখনো দু’চারটে কথা বলেছি, তাকে অপমান বলে না। আসতে বারণ করে নিজেই আবার আসতে বলেছ। -আমি আসতে বলেছি ? ছুতো করে তুমি নিজে এসেছে। --ছতোগুলি তুমি মেনে নাওনি কেন ? বই নিতে এসেছি, বই নিয়ে চলে যেতে দিলেই চুকে যেত। দু’চার দিনের বেশী তো আর ছুতো করে আসতে পারতাম না, আপনা থেকে আমার আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যেত।--মালতীর সঙ্গে কলহ বাধিলে চিরদিন শু্যামলের কথা জড়াইয়া গিয়াছে, আজ তাকে চাপা গলায় ধীরে ধীরে অপরিচিত ভঙ্গিতে কথা বলিতে শুনিয়া মালতীর হঠাৎ কেমন ভয় করিতে লাগিল। শ্যামল ভয়ানক চটিয়া গিয়াছে। রাগে সে থারথার করিয়া কঁাপিতেছে। তবু সে এত আস্তে এত স্পষ্টভাবে কথা বলিতেছে কি করিয়া ? - যাকগে । ওসব কথা থাক শুশ্যামল । --না, থাকবে না । মালতী ভীরু চোখ তুলিয়া শ্যামলের মুখের দিকে তাকায়। শ্যামলের চোখে কি হইয়াছে।--অমন করিয়া তার দিকে সে তাকায় কেন ? রাজকুমারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর শ্যামলের সম্পর্কে মালতীর মনটা বিগড়াইয়া গিয়াছিল। নিজে সে যাচিয়া রাজকুমারকে জানাইয়া দিয়াছিল, শ্যামলের সঙ্গে তার সিনেমায় যাওয়ার কথা আছে, শ্যামল এখনই তাকে নিতে আসিবে, কিন্তু রাজকুমারের সঙ্গে সে আজ সন্ধ্যাট কাটাইতে চায় । ভাবিয়াছিল, শ্যামলকে বাতিল করিয়া তার সঙ্গ চায় শুনিয়া রাজকুমার নিশ্চয় খুশী হইবে। খুশী সে হইয়াছিল কিনা ভগবান জানেন, শ্যামলের সঙ্গেই সিনেমায় যাওয়ার জন্য তাকে রাজী করাইতে কত চেষ্টাই যে রাজকুমার করিয়াছিল! শ্যামলের মনে নাকি কষ্ট দেওয়া উচিত নয়, শ্যামল তাকে ভালবাসে । শেষে