পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ SS তুমি স্যার কে. এল.-এর সঙ্গে দেখা করতে যাবে, আমি বিশ্রাম করব।-শুয়ে থাকব একটু। --তুমি লক্ষ্মী মেয়ে, মালতী। --ছেলেমানুষ নই ? -আগে ছিলে, এখন কি আর তোমায় ছেলেমানুষ বলা যায় ? তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছ মালতী ! আজি থেকে তুমি সুখী হবে। শুনিয়া মালতীর ভয় করিতে থাকে। সুখ-দুঃখের কথা সে কখনো ভাবে নাই। সুখের অথবা দুঃখের কোনদিন তার সচেতন হইতে খেয়াল থাকে নাই আমি সুখী অথবা আমি দুঃখী । নিজের সম্বন্ধে নিজের বিচারে এই হিসাবটা তার চিরদিন বাদ পড়িয়াছে। একটা অজানা মধ্যবিত্ত ফিরিঙ্গি হোটেলের একটি ঘরে তাকে রাখিয়া রাজকুমার স্যার কে. এল.-এর সঙ্গে দেখা করিতে চলিয়া গেলে নিজেকে মালতীর বড় অসহায় মনে হইতে থাকে । অপরিচিত আবেষ্টনীতে নিজেকে এক মনে করিয়া নয়, বঁচিয়া থাকার মত সহজ স্বাভাবিক ব্যাপারটা হঠাৎ অতি বেশী গুরুত্বপূর্ণ হইয়া উঠিয়াছে বলিয়া। তার নিজের একটা জীবন আছে, জীবন যাপনের কঠিন আর জটিল কর্তব্য তাকে পালন করিতে হইবে, কিন্তু সে কিছুই জানে না, কিছুই বুঝে না। তার বুদ্ধি নাই, সাহস নাই, অভিজ্ঞতা নাই। রাজকুমার যাই বলুক, সে সত্যই ছেলেমানুষ, এতকাল শুধু ছেলেখেলা করিয়াছে, ছেলেখেলা করা ছাড়া আর কোন যোগ্যতা তার নাই। জীবন তো ছেলেখেলার ব্যাপার নয় ! হোটেলটি বড় রাস্ত হইতে খানিকটা তফাতে, পথের শব্দ কানে আসে না । হোটেলটিও ছোট এবং প্ৰায় নিঃশব্দ। হোটেলের লোক খাটে দু'জনের বিছানায় ফস চাদর পাতিয়া, পাশাপাশি দু'টি করিয়া বালিশ রাখিয়া গিয়াছে। ছোট গোল চায়ের টেবিলটির দু’দিকে দু’খানা চেয়ার। চারটি বড় বড় জানালায় এমন কৌশলে পর্দা দেওয়া যে ঘরের মধ্যে আলো আসে। কিন্তু মানুষের দৃষ্টি আসে না। দেয়াল