পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

እ8ፃ छछूकां५ সরাসীকেও সে মুক্তি দিতে চাহিয়াছিল, মুক্তি পাইতে সরসী অস্বীকার করিয়াছে। রাজকুমার তাকে ডাকে না, সরসী নিজেই তার কাছে আসে, বাড়িতে না পাইলে স্যার কে. এল-এর বাড়ি গিয়া তার খোজ করে। রিনি তাকে সহ্য করিতে পারে না, নীচে বসিয়া রাজকুমারের সঙ্গে সে কথা বলে । বার বার রিনি তাদের আলাপে বাধা দেয, রাজকুমারকে উপরে ডাকিয়া অনেকক্ষণ আটকাইয়া রাখে, সরসী ধৈৰ্য হারায় না, বিরক্ত হয় না, অপেক্ষা করিয়া বসিয়া থাকে । মাঝে মাঝে রাজকুমারের মনে হয়, সে যেন সকলকে রেহাই দেয় নাই, তাকেই সকলে পরিত্যাগ করিয়াছে, একমাত্র সরসী তাকে ছাটিয়া ফেলে নাই, আরও তার কাছে সরিয়া আসিয়াছে। স্যার কে. এল এর বাড়িতেই রাজকুমারের বেশীর ভাগ সময় কাটে —রিনির কাছে। রাজকুমার না থাকিলে রিনি। অস্থির হইয় ওঠে, কঁদিতে কঁাদিতে নিজের চুল ছেড়ে, রাগ করিয়া আলমারীর কঁচি, চীনা মাটির বাসন ভাঙ্গে, বইয়ের পাতা ছিড়িয়া ফেলে, ধরিতে গেলে মানুষকে কামড়াইয়া দেয়, জামা কাপড় খুলিয়া ফেলিয়া নগ্ন দেহে রাজকুমারের খোজে বাহির হইয়া যাইতে চায় পথে। রাজকুমারকে দেখিলেই সে একেবারে শান্ত হইয়া যায়, আশ্চৰ্য রকম শান্ত হইয়া যায়। প্ৰায় স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের মত কথা বলে ও শোনে, চলাফেরা করে, খাবার খায়, ঘুমায়। একটু তফাৎ হইতে লক্ষ্য করিলে অজানা মানুষের তখন বুঝিবার উপায় থাকে না তার কিছু হইয়াছে। কোন কোন মুহুতে রাজকুমারের পর্যন্ত মনে হয় রিনি বুঝি সারিয়া উঠিয়াছে, একটা চমক দেওয়া উল্লাস জাগিতে না জাগিতে লয় পাইয়া যায়। রিনির চোখ ! রাজকুমার যত কাছেই থাক, যতই সুস্থ ও শান্ত মনে হোক রিনিকে, দুটি চোখের চাহনি রিনির ক্ষণিকের জন্যও স্বাভাবিক इश न । প্রথম দিকে রাত্রে রিনিকে ঘুম পাড়াইয়া রাজকুমার নিজের ঘরে ফিরিয়া যাইত, কিন্তু দেখা গেল এ ব্যবস্থা বজায় রাখা অসম্ভব।