পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ । বীভৎস মনের অবস্থা কেন হইবে মানুষের ? এমন পারিপাশ্বিকতাকে কেন মানুষ মানিয়া লইবে যার প্রভাবে মানুষের মন এতখানি বিকারগ্ৰস্ত আর কুৎসিত হইয়া যায় ? মাথাটা আবার ভার মনে হইতে লাগিল । সত্যই কি আজ তার মাথা ধরিবে, না, অনেক চিন্তা আর উত্তেজনার ফলে আজ মাথাটা এরকম করিতেছে ? একবার স্যার কে. এল-এর বাড়ি গেলে হয়। না, সে যে আজ তার পাটিতে যাইতে পারিবে না। এই কথাটা রিনিকে বলিয়া আসিতে ? এবং একবার রিনির হাত ধরিয়া টানিয়া আসিতে ? ፳ና রাজকুমারের মনে হইতে লাগিল, একবার রিনিদের বাড়ি গিয়া খেলার ছলে রিনির হাত ধরিয়া টানিয়া আর ব্লাউসের একটা বোতাম পরীক্ষা করিয়া সে যদি আজ প্ৰমাণ না করে যে ভদ্র মানুষ সব সময় সব কাজের কদৰ্য মানে করিবার জন্যই উদগ্রীব হইয়া থাকে না, তবে তার মাথাটা ধীরে ধীরে বোমায় পরিণত হইয়া ফাটিয়া যাইবে । তাড়াতাড়ি সে বিছানা ছাড়িয়া উঠিয়া পড়িল ! রিনি চমৎকার গান গাহিতে পারে । অন্ততঃ লোকে তাই বলে । গলাটি তার মৃদু ও মিহি, সুরগুলি তার কোমল ও করুণ, গান সে শিখিয়াছে নামকরা এক ওস্তাদের কাছে । ওস্তাদের বুদ্ধি ছিল তাই তিনি শিষ্যাকে কিছুমাত্র ওস্তাদি শিখাইবার চেষ্টা করেন নাই, শুধু শিখাইয়াছেন মোলায়েম সুর। কেউ কেউ অবশ্য বলে যে রিনি। গান করে না, বিড়ালছানার ছাড়া ছাড়া করুণ আওয়াজটাকেই একটানা উচ্চারণ করিয়া যায়, তবু অনেকের কাছেই রিনির গান ভাল লাগে। মনটা উদাসী হইয়া যায় অনেকের, ঘুমের বাহন ছাড়াই স্বাগত স্বপ্ন নামিয়া আসে। অনেকের চোখে, লজা ও বেদনার সঙ্গে অনেকের মনে হয় যে এত ঘষামাজার পরেও তো তারা মার্জিত জীবন R