পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

At চতুষ্ঠোণ কথার মাঝখানে রিনি। ঘরে আসিয়াছিল । একবার বলিয়াছিল, মালতী নাকি ?-কিন্তু মালতী তার দিকে চাহিয়াও দ্যাখে নাই। কথা শেষ হইতে সে তাই আবার বলিল, এই যে মালতী ! মালতী বলিল, হঁ্যা, আমিই মালতী। চলুন রাজুদা, যাই। বডড cब्रि इश्श cांव । এতক্ষণ রিনির মুখে মৃদু ও স্পষ্ট একটা বিরক্তির ভাবের উপর মাখানো ছিল সবিনয় ভদ্রতার প্রলেপ, একমুহূর্তে সমস্ত মুছিয়া গিয়া মুখ তার অন্ধকার হইয়া গেল। এমনভাবে একবার সে টোক গিলিল যেন কড়া কড়া কতগুলি অভদ্র কথাই গিলিয়া ফেলিতেছে । মন চিরিয়া দেওয়ার মত ধারালো দৃষ্টিতে কয়েক সেকেণ্ড মালতীকে দেখিয়া হঠাৎ সে মুখ ফিরাইল রাজকুমারের দিকে। -শুনে যাও, তোমার সঙ্গে একটা কথা আছে । মালতী ততক্ষণে আগাইয়া গিয়াছে বাহিরের দরজার কাছে, সেখান হইতে সেও তাগিদ দিয়া বলিল, শীগগির আসুন রাজুদা । দাড়াবেন না, চলে আসুন । সুতরাং রাজকুমারের বিপদের আর সীমা রহিল না। তরুণী দু'টির দৃষ্টি-বিনিময় দেখিয়া তার মনে হইতে লাগিল, এই বুঝি একটা খুনো খুনি ব্যাপার ঘটিয়া যায়। রাগে আর আত্মসংযমের চেষ্টায় রিনির সমস্ত শরীর থরথর করিয়া কঁাপিতেছে। মালতীর মুখখানা এখনো হাসি-হাসি বটে, কিন্তু সে হাসি যেন লড়াই করার ধারালো অস্ত্ৰ । চোখের পলকে চোখের সামনে দু’টি ভদ্রঘরের শিক্ষিতা মেয়ে যে এমন একটা নাটক সৃষ্টি করিতে পারে, রাজকুমারের সে অভিজ্ঞতা ছিল না। আড়ালে আড়ালে ভূমিকার অভিনয়টা নিশ্চয় ঘটিয়া গিয়াছে, এ পর্যন্ত সে টেরও পায় নাই। যত আয়োজনই হইয়া থাক, আকাশে তো প্ৰথমে মেঘ দেখা দেয়, তারপর বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্কেত পাওয়া যায়, তারপরে বাজপাত। এ যেন ঠিক বিনা মেঘে বজপাত ঘটিয়া গেল।