পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

് চতুষ্কোণ বলিয়া এতক্ষণ সে রাজকুমারের নজরে পড়ে নাই, আসরে খাঁটি একজন মাদ্রাজী মেয়ে উপস্থিত আছে জানিলে রাজকুমারের বক্তৃতাটা আজ কি রকম দাড়াইত কে জানে ! মেয়েটি বলিল, রাজকুমারবাবু নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাই বলেছেন। ভুল দেখিয়ে দেবার প্রশ্ন ওঠে কি ? এটা ডিবেটিং সোসাইটির মিটিং নয়। আশা করি ? সকলে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করিতে লাগিল। ঠিক তো, রাজকুমার যাই বলিয়া থাক, তার বক্তৃতায় সমালোচনা করিবার কি অধিকার শ্যামলের আছে ? স্যার কে. এল হাসিমুখে বলিলেন, শ্যামল রাজকুমারের ভুল দেখিয়ে দিচ্ছে না, আমাদের যাতে ভুল ধারণা না জন্মায় সেজন্য নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলছে। কি বল শ্যামল ? শ্যামল তাড়াতাড়ি বলিল, আজ্ঞে হঁ্যা। যেমন ধরুন রাজকুমারবাবু বিশ্বের নারীজাতির বিস্ময়কর মিলের কথা বলছেন। পৃথিবীর যেকোন একটি দেশের পুরুষের সঙ্গে অন্য যে-কোন একটি দেশের পুরুষের যতটা পার্থক্য দেখা যায়, দুটি দেশের মেয়েদের পার্থক্য নাকি তার চেয়ে অনেক কম। কথাটা কি ঠিক ? আমাদের দেশের পুরুষরা যখন বিলাতী পুরুষদের সাজপোশাক চালচলন অনুকরণ করে, তখন অতটা খারাপ দেখায় না, কিন্তু মেয়ের ওদেশের মেয়েদের অনুকরণ করলে সেটা উদ্ভট আর হাস্যকর হয়ে দাঁড়ায়। ভারতীয় পুরুষ সহজেই সাজপোশাক চালচলনে তো বটেই, প্ৰকৃতিতে পর্যন্ত সায়েব হতে পারে, কিন্তু ভারতীয় মেয়েরা কোনদিন মেমসায়েব হতে পারে না । রাজকুমারবাবু যে বিশ্বের নারীজাতির কথা বলেছিলেন তার কারণ বিশ্ব শব্দের একটা মোহ আছে, প্ৰথমে সকলকে বিশ্বের কথাটা মনে পড়িয়ে দিলে সকলের মন উদার হয়ে যায়, বাজে কথাও সকলে বড়-বড় অর্থে গ্ৰহণ করে। ও একটা প্যাচ ছাড়া কিছু নয়। রাজকুমারবাবু