পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●● চতুষ্কোণ আমার কথা তুমি ঠিক বুঝতে পারনি শ্যামল। আমি বলেছি অন্য প্রদেশের চেয়ে মাদ্রাজে মেয়ের পরিবর্তনকে গ্ৰহণ করছে একটু ব্যাপকভাবে, সামান্য হলেও তার ব্যাপ্তি আছে। বাংলায় মেয়েদের খুব সামান্য একটা অংশ অনেক এগিয়ে গেছে, তাদের সংখ্যা এত কম যে ধর্তব্যের মধ্যেই বলা চলে না । বাকী সকলে অর্থাৎ বাংলা দেশের মেয়ে বলতে যাদের বুঝায় তারা পড়ে আছে একেবারে পিছনে। মাদ্রাজের মেয়েদের একটা ক্ষুদ্র অংশ-বিশেষ। এভাবে এগিয়ে না গিয়ে সকলে মিলে অল্প-অল্প অগ্রসর হচ্ছে। ব্যাপারটা কেমন হয়েছে জান, বাংলায় একটুখানি নারীপ্রগতি যেন সঞ্চিত হয়েছে কঁাচের সরু নলে, গভীরতা আছে কিন্তু ব্যাপ্তি নাই । আর মাদ্রাজের নারীপ্রগতিটুকু সঞ্চিত হয়েছে। থালায়, গভীরতা নেই। কিন্তু বিস্তার আছে। আমি মনে করি, মৃতদেহের একটা আঙ্গুল প্ৰাণ পেয়ে যতই তিড়িং তিড়িং করে লাফিয়ে জীবনের প্রমাণ দিক, তার চেয়ে সর্বাঙ্গে একটুখানি প্ৰাণ সঞ্চার হয়ে শরীরটা যদি এক ডিগ্রিও গরম হয়, তাও अन्द उठां व् । রাজকুমার ধাপ করিয়া বসিয়া পড়িল। তার ডবল উপমার ধাক্কায় শ্যামলের এতক্ষণের বড় বড় কথাগুলি যেন ধুলা হইয়া বাতাসে উড়িয়া গেল । কিন্তু শ্যামল তখন মরিয়া হইয়া উঠিয়াছে। রাজকুমারকে জব্দ করিতে উঠিয়া নিজে জব্দ হইয়া আসন গ্ৰহণ করার মত মানসিক অবস্থা তার ছিল না। প্রাণপণ চেষ্টায় একটু অবজ্ঞার হাসি হাসিয়া সে বলিতে গেল, রাজকুমারবাবু যে সব রিনি তীক্ষকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিল, আপনি কখনো মাদ্রাজে গেছেন শু্যামলবাবু? শ্যামল দমিয়া গেল, আমতা আমতা করিয়া বলিল, আমি-? না, যাইনি । -ও ! কিছু মনে করবেন না, এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম।