পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুকোণ এক দিকের দুটি জানালাই খোলা । এদিক দিয়া ছাট আসে না। পাশের একতলা বাড়ির ফঁাকা ছাতে বৃষ্টিধারা আছড়াইয়া পড়িয়া গুড়া হইয়া যাইতেছে। বই-এর আলমারি ছাড়িয়া রাজকুমার জানালায় গেল, আবার ফিরিয়া আসিল । -এখন যাই মালতী ! -বৃষ্টি পড়ছে যে ? তাই বটে, বৃষ্টি পড়িতেছে। মালতী যখন মনে পড়াইয়া দিয়াছে এখন বৃষ্টি মাথায় করিয়া চলিয়া যাওয়া অসম্ভব। মালতীর চেয়ারের পিছনে দাড়াইয়া রাজকুমার বলিল, নোট নিয়েছ ? চতুষ্কোণ টেবিলের অন্য তিন দিকের যেখানে খুশী দাড়াইয়া এ | প্রশ্ন করা চলিত, মালতীর খাতাও দেখা চলিত। কিন্তু চতুষ্কোণ ঘরের মতই চতুষ্কোণ টেবিলও মাঝে মাঝে প্ৰান্তরের বিস্তৃতি পায়, এত দূর মনে হয় একটি প্রান্ত হইতে আরেকটি প্রান্ত ! মালতীর খোলা খাতার সাদা পৃষ্ঠা দুটিতে একটি অক্ষরও লেখা হয় নাই, দুটি পৃষ্ঠার যোগরেখার উপর লিখিবার কলমটি পড়িয়া আছে। রাজকুমার হাত বাড়াইয়া পাতা উল্টাইয়া দেখিতে গেল অন্য পৃষ্ঠায় কিছু লেখা আছে কিনা। তার বুকে লাগিয়া মালতীর মাথাটিও নত হইয়া গেল। রাজকুমারের আঙ্গুলে তারের মত সরু একটি আংটি, তাতে এক বিন্দু জলের মত একটি পাথর। দু'হাতে সেই আংটি পরা হাতটি শক্ত করিয়া চাপিয়া ধরিয়া আরও মাথা নামাইয়া আংটির সেই পাথরটিতে মুখ ঠেকাইয়া মালতী চুপ করিয়া পড়িয়া রহিল। সে যেন পিপাসায় কাতর, জল-বিন্দুর মত ওই পাথরটি পান করিয়াই পিপাসা भिछेिड 5ांश । তখন এক কোমল অনুভূতির বন্যায় রাজকুমারের চিন্তা আর অনুভূতির জগৎ ভাসিয়া গেল, মনে হইল শুধু মমতায় এবার তার মরণ হইবে। মালতীর একটি চুলের জন্য তার একি মায়া জাগিয়াছে! এক মুহুর্তের বেশী সহ করাও কঠিন এমন এই আত্মবিলোপ ) মালতীকে