পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কেরণ চোখে অসুখ হয়েছে, কেমন ? আগে আরও অনেকের চোখে এই রকম অসুখ হয়েছে, অল্পদিনের মধ্যে তারা অন্ধ হয়ে গেছে, তুমি তাই বলতে পারছি নগেনবাবুও অন্ধ হয়ে যাবেন। মানুষের হাতেও তো চেনা লক্ষণ থাকতে পারে, যা দেখে এরকম ভবিষ্যদ্বাণী করা চলে ? যেমন ধরো-পরেশের হাত টানিয়া আঙ্গুলগুলির ঠিক নীচে হাতের তালুতে চারটি চিহ্ন দেখাইয়া দেয়, এগুলো দেখে আমি বুঝতে পারছি ডাক্তারিতে তোমার কোনদিন পাসার হবে না । হাত দেখার বুজরুকিতে পারেশের হঠাৎ গভীর কৌতুহল দেখা যায়। আগ্রহের সঙ্গে সে জিজ্ঞাসা করে, কি করে জানলে ? -আরও অনেকের হাতে এরকম চিহ্ন ছিল, দেখা গেছে তারা খুব ঢ়িলে অলস প্ৰকৃতির মানুষ। কোন বিষয়ে চেষ্টাও থাকে না, পরিশ্রমও করতে পারে না । বছর পাচেকের মধ্যে তোমার উন্নতি ३७ां अनgद । -পাঁচ বছর পরে সম্ভব ? --ত বলা যায় না। তবে উন্নতি না হওয়ার লিমিট যে পাঁচবছর সেটা জোর করে বলতে পারি। বাপের পয়সাতেই এ ক'টা বছর তোমায় চালাতে হবে । অবস্থার ফেরে যদি স্বভাব বদলায়, হাতের এই চিহ্নগুলিও বদলে যাবে, তখন হয়তো তোমার কিছু হতে পারে। বছর পাঁচেক সময় তাতে লাগবেই। পরেশ মনে মনে চটিয়াছিল, ব্যঙ্গ করিয়া বলিল, তুমি এত বড় গণৎকার হয়ে উঠেছ তাতো জানতাম না। ডাক্তারি করার আগে তোমার সঙ্গে পরামর্শ না করে তো ভুল করেছিা! -শুধু ডাক্তারি তো নয়, তা বলিনি। আমি। ডাক্তারিতে পসার হবে না, একথা তোমার হাতে লেখা নেই। থাকলেও সে লেখা পড়বার ক্ষমতা আমার নেই। তোমার হাতে লক্ষণ আছে উন্নতি করার অক্ষমতার। নিজে উপার্জন করে বড়লোক হওয়ার ক্ষমতা তোমার নেই, তাই বলে তোমার যে টাকা হবে না। তাও বলা চলে না ।