পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

y চতুষ্কোশ অন্য কেউ তােমার টাকা খাটিয়ে তোমাকে আরও বড়লোক করে দিতে পারে, কোন আত্মীয় মারা গিয়ে সম্পত্তি দিয়ে যেতে পারে, লটারীর টিকিট কিনে টাকা পেতে পার । তোমার হাত দেখে যদি বলি টাকা তোমার হবে না, শান্তি স্বস্ত্যয়ন কর, সেটা হবে বুজরুকি । কিন্তু যদি বলি নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে টাকা তোমার হবে না, সেটা হবে বিজ্ঞান। হাত দেখাও খানিকটা বিজ্ঞান, বাকীটা বুজরুকি । আর এই বুজরুকির জন্যই খাট জিনিসটুকুর ওপর লোকের বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেছে। বেশী ফকির সুযোগ থাকলে বিজ্ঞান ভেস্তে যায়। ফুটপাতের তিলক-আঁাটা উড়ে গণৎকারের মত ডাক্তার গজাতে পায় না। বলে তোমাদের লোকে বিশ্বাস করে, নিমুনিয়া হলে তোমরা অনেকে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা কর, তবু। --তাই নাকি ? --তাই। বিজ্ঞানের এত উন্নতি কেন সম্ভব হয়েছে জান ? জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিকের কথাও কেউ বিশ্বাস করতে পাবে না। এই নিয়ম মেনে চলা হয়েছে বলে । সামান্য একটি আবিষ্কার পর্যন্ত তাকে প্ৰমাণ করতে হবে,--আগে শ খানেক আবিষ্কারে মানুষকে চমকে দিয়েছে বলেই যে তার একশ’ একনম্বর আবিষ্কারটি মেনে নেওয়া হবে, তা চলবে না । অনুমান করার অধিকার আছে কিন্তু সেটা অনুমান বলেই ঘোষণা করতে হবে। “আমি বলছি' বলে কোন কথা বিজ্ঞানে নেই। --সত্যি, ভারি আশ্চৰ্য তো ! রাজকুমার মনে মনে হাসে। ঠিক এই প্ৰতিক্রিয়াই পরেশের কাছে প্ৰত্যাশা করা চলে। অকৰ্মণ্য অলস মানুষের স্থিতিশীল অকৰ্মণ্যতার এও একটা প্ৰমাণ যা ভাবে না, জানে না। অন্যের কাছে তার ব্যাখ্যা শুনিতে এরা জ্বালা বোধ করে। মনে করে তারই যেন সমালোচনা করিতেছে, উপদেশ দিয়া প্ৰমাণ করিতেছে তারই মুখত ।