পাতা:চতুষ্কোণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুষ্কোণ ভাবিতে ভাবিতে গভীর একাকীত্বের অনুভূতি তাকে বিষয় করিয়া দেয়। মানুষের সঙ্গ লাভের এমন একটা জোরালো কামনা সে অনুভব করে যেন বহুদিন জনহীন অরণ্যে বা প্ৰান্তরে বাস করিতেছে। ক্লাবের কথা মনে পড়ায় তাড়াতাড়ি সে সেখানে গিয়া হাজির হয়। টেনিস খেলার শখ জাগায় একদিন সে ক্লাবে যোগ দিয়াছিল, তারপর নিয়মিত চান্দা দিয়া আসিতেছে। কিন্তু ক্লাবে যাতায়াত করে কদাচিৎ ৷ এই ব্যাপারটাও আজ যেন তার খেয়াল হইল প্ৰথম । ক্লাবের সে মেম্বর, ক্লাবে সুযোগ আছে খেলাধুলা ও দশজনের সঙ্গে মেলামেশা করার, কিন্তু ক্লাবের জন্য কোন আকর্ষণ সে অনুভব করে না । মানুষের সঙ্গ সে কি ভালবাসে না ? মানুষটা কি কুনো ? অথবা দশজনের সঙ্গে মানাইয়া চলিতে পারে না বলিয়া দশজনকে এড়াইয়া চলে ? স্যার কে. এল. প্ৰায়ই ক্লাবে বিলিয়ার্ড খেলিতে আসেন। তিনজন অধপরিচিতের সঙ্গে ব্রিজ খেলিতে বসিয়া রাত ন’টার সময় বিরক্তিতে রাজকুমারের চোখে যখন প্ৰায় জল আসিয়া পড়ার উপক্ৰম করিয়াছে, স্যার কে, এল-ই তাকে উদ্ধার করিলেন। গাড়িতে উঠিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, হঠাৎ তুমি আজ এদিকে ? রাজকুমার বলিল, আডিডা দিতে এসেছিলাম। কিন্তু আডা আমার একেবারে সয় না । -আমারও সয় না। তবু আডা দিই। পথে স্যার কে. এল.-এর এক বন্ধুর বাড়ি হইতে রিনিকে তুলিয়া নেওয়ার কথা ছিল । রিনি। এখানে প্ৰায়ই রাত্রে টেনিস খেলিতে আসে। বিকালে সে খেলে না । খেলার পর যে শ্ৰান্তি বোধ হয় তাতে নাকি বিকালটা তার মাটি হইয়া যায়। রিনির দেখাদেখি আরও কয়েকটি ছেলেমেয়ে নাকি বিকালের বদলে রাত্রে টেনিস খেলার সুবিধা বুঝিতে পারিয়াছে। তখনও খেলা চলিতেছিল । সর্ট আর সার্ট পরা রিনিকে যে সে