পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
চমৎকুমারী ইত্যাদি

একটু কুঁদুলীও বটে। কিন্তু বাপের টাকা আছে, বিয়ে করলে কিছু পাওয়া যাবে। তার পর ধরুন, যদি কারবারটি বাড়াতে চাই তবে শ্বশুরের কাছ থেকে কোন না আরও হাজার খানিক টাকা বাগাতে পারব। দু নম্বর পাত্রী হচ্ছে বিজনবালা, ডাক নাম বিজি, এই রতন শালার বোন। বাপ নেই, শুধু বুড়ী মা আর এই ভাগাবণ্ড ভাইটা আছে, অবস্থা খারাপ, বরপণ নবডঙ্কা। কিন্তু মেয়েটা দেখতে অতি খাসা, নানা রকম রান্না জানে, এক পো মাংসের সঙ্গে দেদার মোচা এঁচড় ডুমরের কিমা মিশিয়ে শ-খানিক এমন চপ বানাবে যে আপনি ধরতেই পারবেন না যে তার চোদ্দ আনা নিরিমিষ। বিজিকে বে করলে সে আমার সত্যিকার পার্টনার হবে। শ্বশুরের টাকা নাই বা পেলাম, আপনার আশীর্বাদে আমার পুঁজি নেহাত মন্দ নেই। ইচ্ছে আছে টি-শপটির বোম্বাই প্যাটার্ন নাম দেব, নিখিল ভারত বিশ্রান্তি গৃহ। চপ কাটলেট ডেভিল মামলেট এই সব তৈরি করব, খদ্দেরের অভাব হবে না মশাই। আমার খুব ঝোঁক বিজির ওপর, কিন্তু মুশকিল হয়েছে তার মা আর বাউণ্ডুলে ভাইটা আমার ঘাড়ে পড়বে। বুড়ী শ্বাশুড়ীকে পুষতে আপত্তি নেই, কিন্তু এই রতনা আমার কাঁধে চাপবে আর বোনের কাছ থেকে হরদম টাকা আদায় করবে তা আমি চাই না।

 রতন বলল, আমি কথা দিচ্ছি তোমার কাঁধে চাপব না। আমার ভাবনা কি, ইলেকট্রিকের সব কাজ জানি, আর্মেচারের তার পর্যন্ত জড়াতে পারি। একটা ভাল চাকরি জোগাড় করতে পারি না মনে কর?

 —যোগাড় করতে পারিস তো করিস না কেন রে হতভাগা? এ পর্যন্ত অনেক কাজ তো পেয়েছিলি, একটাতেও লেগে থাকতে পারলি নি কেন? এই কিরণ চক্কোত্তি তোর মাথা খেয়েছে, দিনরাত তার তরুণ অপেরা পার্টিতে আড্ডা দিস, হয়তো নেশা-ভাঙও করিস।