পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গনৎকার
৯৩

 —মাইরি বলছি গোষ্ঠ-দা, খারাপ নেশা অমি করি না। মাঝে মাঝে একটু সিদ্ধির শরবত খাই বটে, কিন্তু খুব মাইল্ড।

 আমি বললুম, গোষ্ঠবাবু আপনার সমস্যাটি তো তেমন কঠিন নয়। যখন শ্রীমতী বিজনবালাকে মনে ধরেছে, তখন তাঁকে বিয়ে করাই তো ভাল। একটু রিস্ক না হয় নিলেন।

 —আপনি জানেন না মশাই, এই রতনা সোজা রিস্ক নয়। সেই জন্যেই তো এই সায়েব জ্যোতিষীর কাছে এসেছি, আমার ঠিকুজিটাও এনেছি। ইনি সব কথা শুনে আমার হাত দেখে আর আঁক করে যার নাম বলবেন, বিজনবালা কি গোলাপসুন্দরী, তাকেই প্রজাপতির নির্বন্ধ মনে করে বে করব। কুড়ি টাকা লাগে লাগুক, একটা তো হেস্তনেস্ত হয়ে যাবে।

 —আচ্ছা, এই রতন যদি কলকাতার বাইরে একটা ভাল কাজ পায়, তা হলে তো আপনার সুরাহা হতে পারে?

 —সুরাহা নিশ্চয় হয়, আমি তা হলে নিশ্চিন্দি হয়ে বিজিকে যে করতে পারি। কিন্তু তেমন চাকরি ওকে দিচ্ছে কে?

 —রতনবাবু, তোমার লাইসেন্স আছে?

 রতন বলল, আছে বইকি, ভাল ভাল সাট্টিফিকিটও আছে। দয়া করে একটি কাজ যোগাড় করে দিন না সার, গোষ্ঠ-দার গঞ্জনা আর সইতে পারি না।

 আমি বললুম, শোন রতন। একটি এঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের সঙ্গে আমার যোগ আছে, শিলিগুড়ি ব্রাঞ্চের জন্যে একজন ফিটার মিস্ত্রী দরকার। তোমাকে কাজটি দিতে পারি, প্রথমে এক শ টাকা মাইনে পাবে, তিন মাস প্রোবেশনের পর দেড় শ। কিন্তু শর্ত এই, একটি বৎসর শিলিগুড়ি থেকে নড়বে না, তবে বোনের বিয়ের সময় চার-পাঁচ দিন ছুটি পেতে পার। রাজী আছ?