পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাড়ে সাত লাখ
১০৫

 ঠোঁটে ঈষৎ হাসি ফুটিয়ে ডক্টর প্রেমসিন্ধু খাণ্ডারী কিছুক্ষণ ধীরে ধীরে ডাইনে বাঁয়ে মাথা নাড়লেন। তার পর বললেন, শুনুন নীতীশবাবু, আপনার মতন নরম মন অনেকেরই আছে, কিন্তু তা একটা মহা ভ্রাম্ভির ফল। যদি শক্‌ড না হন তবে খোলসা করে বলি।

 নীতীশ আর হেমন্ত একসঙ্গে বলল, না না, শক্‌ড হব না, খোলসা করেই বলুন।

 —নীতীশবাবু যে সব আতুরজনের কথা বললেন, তাদের বাঁচিয়ে রাখলে সমাজের কি লাভ? ধরুন আপনি বেগুন কি ঢ্যাঁড়িসের খেত করেছেন। পোকাধরা অপুষ্ট গাছগুলোকেও কি বাঁচিয়ে রাখবেন? নিশ্চয়ই নয়, তাদের উপড়ে ফেলে দেবেন, নয়তো ভাল গছগুলোর ক্ষতি হবে। পঙ্গু আতুর জনও সেই রকম, তারা সমাজের কোনও কাজে আসে না, শুধু গলগ্রহ। যদি স্বহস্তে উৎপাটন করতে না চান তবে অন্তত তাদের বাঁচিয়ে রাখবার চেষ্টা করবেন না, চটপট মরতে দিন। দেখুন, আমাদের দেশে নানা রকম অভাব আছে, খাদ্য বস্ত্র আবাস বিদ্যা চিকিৎসা, আরও কত কি। সমাজের যারা যোগ্যতম, অর্থাৎ সুস্থ প্রকৃতিস্থ বুদ্ধিমান কাজের লোক, শুধু তাদেরই যাতে মঙ্গল হয় সেই চেষ্টা করুন, যারা আতুর অক্ষম জড়বুদ্ধি আর স্থবির তাদের সেবার জন্যে টাকার অপব্যয় করবেন না। জানেন বোধ হয়, ২৫।৩০ বৎসর পরে ভারতের লোকসংখ্যা ৪০ কোটির স্থানে ৮০ কোটি হবে। এত লোক পুষবেন কি করে? যতই কৃষিবদ্ধি আর জন্মশাসনের চেষ্টা করুন, বিশেষ কিছু ফল হবে না, আশি কোটি অধিবাসীর ঠেলা কিছুতেই সামলাতে পারবেন না।

 — আপনি কি করতে বলেন?

 —আমি যা চাই তা শুনেলে নেহেরুজীর মতন র‍্যাশনাল লোকও