পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যশোমতী
১১৫

 পুরঞ্জয় বললেন, যশোমতী, এরা তো আমাকে চেনে না, তুমি ইনট্রোডিউস করে দাও।

 যশোমতী বললেন, পঞ্চান্ন বছর পরে কাল তোমাকে দেখেছি। আমি তোমার কতটুকু জানি? তুমিই নিজের পরিচয় দাও না।

 পুরঞ্জয় বললেন, বেশ শোন দাদাভাই ধ্রুব, আর কি নাম তোমার রাকা। আমি হচ্ছি ডাক্তার পুরঞ্জয় ভঞ্জ, মেজর, আই.এম.এস, রিটায়ার্ড। চিকিৎসা বিদ্যা এখন প্রায় ভুলে গেছি। বহু কাল আগে তোমাদের এই ঠাকুমার ছেলেবেলার সঙ্গী ছিলাম, আলীপুরে আমাদের বাড়ি পাশাপাশি ছিল। ওঁকে খেপাবার জন্যে আমি বলতুম, যশোটা থসথসোটা। উনি আমাকে বলতেন, পুরোটা ঘুরঘুরোটা। আমরা যেন ভাই বোন ছিলুম।

 ধ্রুব বলল, শধুই ভাই বোন?

 —তার চাইতে বরং বেশী। একদিন দেখা না হলে অস্থির হতুম।

 হিহি করে হেসে রাকা চলল, দাদু, শুনেছি আপনি স্পষ্টবক্তা লোক, রেখে ঢেকে কিছু বলতে পারেন না। কেন কষ্ট করে বানিয়ে বানিয়ে মিছে কথা বলবেন? মন খোলসা করে বলে ফেলুন। আমরা সব জানি, আমাদের জেরার চোটে ঠাকুমা সব কবুল করেছেন।

 পুরঞ্জয় বললেন, যশো, তুমি দিব্যি একজোড়া শুক-সারী টিয়াপাখি পুষেছ। এরা আমাকে ফ্যাসাদে ফেলবে না তো?

 হাত নেড়ে রাকা বলল, না না, আপনার কোনও চিন্তা নেই, নির্ভয়ে সত্যি কথা বলুন। ঠকুমা আর আমরা সবাই খুব উদার, আমাদের কোনও সেকেলে অন্ধ সংস্কার নেই।

 —বেশ বেশ। তা হলে নিশ্চয় শুনেছ যে যশোর সঙ্গে আমার প্রচণ্ড প্রেম হয়েছিল। তার পর ওঁর বিয়ে হয়ে যেতেই আমাদের ছাড়াছাড়ি হল, মনের দুঃখে আমি বোম্বাইএ গিয়ে মেডিক্যাল কলেজে