পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
চমৎকুমারী ইত্যাদি

 —জানবেই তো, কত বড় বংশের সায়েব। কিন্তু বসতে দিবি কিসে? বাড়িতে একটাও ভাল চেয়ার নেই।

 —ভেবো না, তার ব্যবস্থা আমি করেছি।

 জয়রাম চঞ্চল হয়ে বললেন, ওরে শিবু চট করে আমার সেই জীনের পাতলুন আর মুগার চাপকানটা বের করে আমাকে পরিয়ে দে। তোর বউএর কাছ থেকে একটু খোসবায় এনে ভাল করে মাখিয়ে দিস, যাতে ন্যাফথালিনের গন্ধ চাপা পড়ে। আর, একটা উড়ুনি বেশ করে কুচিয়ে পাকিয়ে দে, গলায় দেব। আর, আমার ঘড়ি, ঘড়ির চেন, সার চার্লস সিমসন যা দিয়েছিলেন।

 —কেন শুধু শুধু ব্যস্ত হচ্ছ দাদু, তুমি যা পরে আছ সেই সাজেই সায়েবের সঙ্গে দেখা করবে। খাতির জানাবার জন্যে কাগতাড়ুয়া সাজবার কোনও দরকার নেই।

 উপস্থিত স্বজনবর্গের দিকে সগর্বে দৃষ্টিপাত করে জয়রাম বললেন, উঃ, মস্ত লোক ছিলেন সার চার্লস সিমসন। আমাকে কি রকম স্নেহ করতেন, হরদম ডাকতেন, ন্যাণ্ডি ব্যাবু, ন্যাণ্ডি ব্যাবু। ওরে শিবু জন্মদিনের উপহার কি সব এল তা তো দেখালি নি।

 —তা ভালই এসেছে। ফুলের মালা, ফুলের তোড়া, গরদের জোড়, নামাবলী, দুধখাবার রুপোর গেলাস, গড়গড়ার রুপোর মুখনল, বাক্স বাক্স সন্দেশ আর চন্দ্রপুলি, ল্যাংড়া আম, মিহি পেশোয়ারী চাল, গাওয়া ঘি, আরও কত কি।

 —পাকা কই মাছ দিয়েছে?

 —না, তা তো কেউ দেয় নি।

 —তবে কি ছাই দিয়েছে। তোর বউকে শিগ্‌গির ডাক।

 নাতবউ শিবানী আধঘোমটা দিয়ে ঘরে এল। জয়রাম বললেন, এই শিবি, আজ পেশোয়ারী চালের চাট্টি পোলাও করবি, শুধু আমার