পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জয়রাম-জয়ন্তী
১২৩

জন্যে, বুঝলি? পাঁচ ভূতকে খাওয়ালে ওই টুকু চাল কদিন টিকবে। নতুন বাজার থেকে ভাল পোনা মাছ আনিয়ে দই আদা লংকা গরম মসলা দিয়ে গরগরে করে কালিয়া রাঁধবি—

 ডাক্তার উমেশ গুহ বললেন, পোলাও কালিয়া এখন থাকুক সার। আপনার এ বয়সে লঘু পথ্যই ভাল।

 —হুঁ। বয়সটা কত্ত ঠাওর করেছ ডাক্তার?

 —সেকি, জানেন না? আজ যে আপনি এক শ বছরে পা দিয়েছেন, তাই তো আমরা জয়ন্তী করছি। এমন দীর্ঘ আয়ু কত লোকের ভাগ্যে হয়!

 —এক শ বছর না তোমার মুণ্ডু। মোটে সত্তর, এই তো সবে সেদিন পঁয়ষট্টি বছর বয়সে রিটায়ার করলুম। এই শিবে শালা আর ওর বাপ হরে ব্যাটা মিছিমিছি বয়স বাড়িয়ে আমাকে ভয় দেখায়, না খাইয়ে মেরে ফেলতে চায়, আমার সম্পত্তির ওপর ওদের দারুণ টান। শাস্ত্রে লিখেছে না—পুত্রাদপি ধনভাজাং ভীতিঃ। উমেশ ডাক্তারকেও ওরা হাত করেছে।

 শিবানী বলল, কারও কথা শুনবেন না দাদু, আপনার জন্যে পোলাও কালিয়াই রাঁধব। তার পর ডাক্তারের দিকে চেয়ে ফিসফিস করে বলল, শিউলি-বোঁটার রঙ দেওয়া গলা ভাত আর শিঙিমাছের ঝোল।

 জয়রাম বললেন, শিবি, তোর দেখছি একটু দয়ামায়া আছে। দুটো ল্যাংড়া আম ছাড়িয়ে দে তো দিদি, আর খান দুই চন্দ্রপুলি, দেখি কেমন উপহার দিয়েছে। চট করে দে, বড়সায়েব আসবার আগেই খেয়ে নি।

 —সেকি দাদু, একটু আগেই তো দুধে-সন্দেশ খেলেন। বিকেল বেলা একটু আম আর চন্দ্রপুলি খাবেন এখন।