গুপী সায়েব
এই লোকটির নয় আপনাদের হয়তো জানা নেই। আমিও তাকে ভুলে গিয়েছিলুম, কিন্তু সেদিন হঠাৎ মনে পড়ে গেল। তার যে ইতিহাস নয়নচাঁদ পাইন আর দাশু মল্লিককে বলেছিলুম তাই আজ আপনাদের বলছি। নয়নচাঁদ আর দাশু তা মন দিয়ে শোনেন নি, কারণ তাঁদের তখন অন্য ভাবনা ছিল। আমার বিশ্বাস, গুপী সায়েব অখ্যাত হলেও একজন অসাধারণ গুণী লোক। আশা করি আপনারা যথোচিত শ্রদ্ধাসহকারে তার এই ইতিহাস শুনবেন।
নয়নচাঁদ পাইনের ঘড়ির ব্যবসা আছে। দাশু মল্লিক তাঁর দূর সম্পর্কের শালা, নেশাখোর, কিন্তু খুব সরল লোক। নয়নচাঁদের ছেলের বিয়ের কথাবার্তা চলছে। কনের ঠাকুরদা হৃদয় দাসের সঙ্গে আমার আলাপ আছে, সেজন্যে নয়নচাঁদ আমাকে অনুরোধ করেছেন তাঁর দাবি সম্বন্ধে আমিই যেন হৃদয় দাসের সঙ্গে কথা বলি। দাবির দুটি আইটেমর ওপর আমাকে বেশী জোর দিতে হবে। এক নম্বর— পাত্রের পিতার জন্যে একটি মোটর গাড়ি অগ্রিম চাই, উত্তম সেকেণ্ড হ্যাণ্ড হলেও চলবে। দু নম্বর—যেহেতু এদেশে পাত্রের তেমন লেখাপড়া হল না, সেকারণে দাদা শ্বশুরের খরচে তাকে জেনিভা পাঠাতে হবে, ঘড়ি তৈরি শেখবার জন্যে।
আমার দৌত্যের ফল কি হল তা জানবার জন্য দাশু মল্লিক আমার কাছে এসেছেন, নয়নচাঁদও একটু পরে আসবেন। আমি বললুম, দাশুবাবু, ব্যস্ত হচ্ছেন কেন, পাইন মশাই এলেই সব খবর বলব। ততক্ষণ একটা বর্মা চুরটে টনন।