—তা হয়েছে।
—বেশ বেশ, নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। যাক, এখন তুমি গুপী সায়েবের ইতিহাস বল।
আমি বলতে লাগলুম।—
গুপী সায়েব লেখাপড়া বেশী শেখে নি, কিন্তু ছোকরা খুব পরোপকারী ছিল আর হরেক রকম জানোয়ার সম্বন্ধে তার অগাধ জ্ঞান ছিল। তার মক্কেলও ছিল বিস্তর। পয়সার জন্যে নয়, শখের জন্যেই সে ফরমাশ খাটত, তবে কেউ কিছু দিলে খুশী হয়ে নিত। মনে করুন আপনি একটা ভাল কাবুলী বেরাল চান। গুপী সায়েব ঠিক যোগাড় করে দেবে, এমন বেরাল যার ন্যাজ খ্যাঁকশেয়ালকে হারিয়ে দেয়। আমাদের পাড়ার রাধাশ্যাম গোসাঁইএর নাতির শখ হল একটা বুলডগ পুষবে। কিন্তু বাড়িতে মাংস আনা বারণ। গ্রুপী সায়েব এমন একটা কুত্তা এনে দিল যে ভাত ডাল ডাঁটা-চচ্চড়িতেই তুষ্ট, আর হাড়ের বদলে এক টুকরো কঞ্চি বা একটি পুরনো টুথব্রশ পেলেও তার চলে। কালীচরণ তন্ত্রবাগীশকে মনে আছে? লোকটা গোঁড়া শাক্ত, রাধাকৃষ্ণ কি সীতারাম শুনলে কানে আঙুল দিতেন। তাঁর শখ হল একটি ময়না পুষবেন, কিন্তু বৈষ্ণবী বুলি কপচালে চলবে না। গুপী সায়েব তারাপীঠ না চন্দ্রনাথ কোথা থেকে একটা পাখি নিয়ে এল, সে গাঁজাখোরের মতন হেঁড়ে গলায় শুধু বলত, তারা তারা বল্ শালারা।
সেই সময় হ্যারিসন রোডে বিখ্যাত সিনেমা হাউস ছিল ঝমক মহল। করুগেট লোহার ছাত, তার নীচে কাঠের সীলিং। বহুকালের পুরনো বাড়ি, সীলিংএ অনেক ফাঁক ছিল, তাই দিয়ে বিস্তর পায়রা ঢুকে ভেতরের কার্নিসে রাত্রিযাপন করত। অডিটোরিয়ম এত নোংরা