পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
চমৎকুমারী ইত্যাদি

হত যে দর্শকরা হল্লা করতে শুরু করল। ম্যানেজার হরমুসজী ছিপিওয়ালা পায়রা তাড়াবার অনেক চেষ্টা করলেন, কিন্তু কিছুই হল না। মেরে ফেলবার উপায় নেই, কারণ হিন্দুর চোখে গরু যেমন ভগবতী, তেমনি হিন্দু, মুসলমান আর পারসীর চোখে পায়রা লক্ষ্মীর প্রজা। ছিপিওয়ালা সায়েব লোকপরম্পরায় শুনলেন, পায়রা তাড়াতে পারে একমাত্র গুপী সায়েব। তাকে কল দেওয়া হল। সে বলল, খুব সোজা কাজ। রাত বরোটার পর যখন শো বন্ধ হবে আর পায়রার দল বেহুঁশ হয়ে ঘুমুবে তখন দু-তিন জন লোক লাগিয়ে দেবেন। তারা মই দিয়ে উঠবে আর প্রত্যেকটি পায়রার পেট টিপে ছেড়ে দেবে। পায়রার স্মরণশক্তি তীক্ষ্ণ নয়, সেজন্যে দিন কতক নিয়মিত ভাবে পেট টেপা দরকার। ক্রমশ তাদের হৃদয়ংগম হবে যে এই ঝনক মহল সিনেমা ভবন পায়রার পক্ষে মোটেই নিরাপদ আশ্রয় নয়। গুপী সায়েবের ব্যবস্থা অনুসারে হরমুসজী ছিপিওয়ালা প্রাত্যহিক পেট টেপার অর্ডার দিলেন, দিন কতক পরেই পায়রার দল বিদায় হল। গুপী পঁচিশ ঢাকা দক্ষিণা পেল। তার কয়েক মাস পরে সিনেমা হাউসের ভাড়া নিয়ে ঝগড়া হওয়ায় ছিপিওয়ালা সায়েব নাগপুরে চলে গেলেন, ঝনক মহলের মালিক পুরনো বাড়ি ভেঙে ফেলে নতুন হাউস বানালেন।

 একদিন গুপী সায়েব আমার এখানে এসেছে, তার ডান হাতে রবারের দস্তানা, বাঁ হাতে একটা দেশলাই-এর বাক্স। আমরা প্রশ্ন করলুম, ব্যাপার কি? গুপী সায়েব জবাব দিল না, ফরাসের ওপর দুখানা খবরের কাগজ বিছিয়ে দেশলাইএর বাক্স খুলে তার ওপর ঢালল। ছোট ছোট জুঁই ফলের কুঁড়ির মতন সাদা পদার্থ। গুপী বলল, ডেয়ো পিঁপড়ের ডিম, বারো টাকা ভরি, দু আনা দিয়ে এক রতি কিনেছি, খুব পোষ্টাই। তার পর দস্তানা পরা ডান হাত পকেটে পুরে আবার বের করল, কাঁকড়াবিছেতে হাত ছেয়ে গেছে। আমরা ত্রস্ত