পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুলবুলিস্তান
১৪৭

নরমুণ্ড ঝুলছে। তাদের দাড়ি হরেক রকম, কাঁচা, কাঁচা-পাকা, গালপাট্টা, ছাগল দাড়ি, লম্বা দাড়ি, গোঁফহীন দাড়ি ইত্যাদি।

 উৎফুলুন্নেসা বললেন, শোন বড় জাহাঁপনা আর ছোট জাহাঁপনা, এই সব মুণ্ড হচ্ছে আমাদের ভূতপূর্বে স্বামীদের। উত্তরদিকের দেওয়ালে আমার স্বামীদের, আর দক্ষিণের দেওয়ালে লুৎফুলের। বিবাহের পর এরা প্রত্যেকেই আমাদের সখীদের প্রতি লোলুপ নয়নে চেয়েছিল, সেজন্যে আমাদের নিয়ম অনুসারে এদের কতল করা হয়েছে। তোমরা যেমন কুলটা স্ত্রীকে দণ্ড দাও, আমরা তেমনি লম্পট স্বামীকে দিই। ওহে শাহরিয়ার আর শাহজমান, যদি হুঁশিয়ার না হও তবে তোমাদেরও এই দশা হবে। খবরদার, তলোয়ারে হাত দিও না, তা হলে আমাদের এই রক্ষীরা এখনই তোমার গরদান নেবে।

 শাহরিয়ার বললেন, পিশাচী রাক্ষসী ঘূলী ইবলিস-নন্দিনী, তোমাদের মনে কি দয়া মায়া নেই?

 —তোমাদের চাইতে ঢের বেশী আছে। তোমরা প্রতিদিন নব নব বধূ ঘরে এনেছ, এক রাত্রির পরেই প্রত্যেককে হত্যা করেছ। তাদের চরিত্র ভাল কি মন্দ তা না জেনেই মেরে ফেলেছ। আমরা অত নির্দয় নই, বিনা দোষে পতিহত্যা করি না। যদি দেখি লোকটা অন্য নারীর উপর নজর দিচ্ছে তবেই তার গরদান নিই।

 শাহজমান চুপি চুপি বললেন, দাদা, মুণ্ডুগুলো মাটির কি প্লাস্টিকের তৈরী নয় তো?

 শাহরিয়ার বললেন, না, তা হলে মাছি বসত না। অবশ্য একটু গুড় লাগালেও মাছি বসে। যাই হক, এই শয়তানীদের কবল থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। আমাদের সঙ্গে যদি প্রচুর সৈন্য থাকত তবে সখীর দল সমেত এদের গ্রেপতার করে নিয়ে যেতাম।