তার পর শাহরিয়ার গুরুম্ভীর স্বরে বললেন, শাহজাদী, তোমাদের আমরা তালাক দিলাম, এখনই দেশে ফিরে যাব।
উৎফুল বললেন, তোমাদের তালাক-বাক্য গ্রাহ্য নয়, এখানকার আইন আলাদা। আমরা ছেড়ে না দিলে তোমাদের এখান থেকে মুক্তি নেই।
—তবে এই সখীদের সরিয়ে দাও, ওরা চোখের সামনে থাকলে আমাদের লোভ হবে।
—ওরা এখানেই থাকবে, নইলে তোমাদের চরিত্রের পরীক্ষা হবে কি করে।
মাথা চাপড়ে শাহরিয়ার বললেন, হা, আমাদের পারস্য আর তাতার রাজ্যের কি হবে?
উৎফুল বললেন, তার জন্যে ভেবো না। তোমার সেনাপতি শমশের জঙ্গ্ শহরজাদীকে বেগম করে পারস্যের সিংহাসনে বসবে আর নওশের জঙ্গ দিনারজাদীকে বেগম করে তাতার রাজ্যের মালিক হবে। তুমি আর শাহজমান এখনই ফরমান আর রাজীনামায় পাঞ্জা ছাপ লাগাও। দেরি ক’রো না, তা হলে বিপদে পড়বে।
নিরুপায় হয়ে শাহরিয়ার আর শাহজমান দলিলে পাঞ্জার ছাপ দিলেন। তার পর শাহরিয়ার করজোড়ে বললেন, শাহজাদী, দয়া কর এখানে তোমাদের সখীদের দেখলে আমরা প্রলোভনে পড়ব, প্রাণ হারাব। আমাদের অন্য কোথাও থাকতে দাও।
—তা থাকতে পার। এই গুলবুলিস্তানের উত্তরে পাহাড়ের গায়ে অনেক গুহা আছে, সেখানে তোমরা সুখে থাকতে পারবে। সাত দিন অন্তর এখান থেকে রসদ পাবে। দুজন মোল্লাও মাঝে মাঝে গিয়ে ধর্মোপদেশ দেবেন। ওখানে তোমরা পাপমোচনের জন্যে নিরন্তর তসবি জপ করবে এবং হরদম আল্লার নাম নেবে।