নরকের ভয়? মিছে কথা বলতে বাধে? এসব থাকলে কিছুই হবে না বাপু!
একটু ভেবে দিবাকর বলল, স্বর্গ নরক মানি না, তবে ধর্মভয় একটু আছে, চিরকালের সংস্কার কিনা। দরকার হলে অল্প স্বল্প মিছে কথাও বলি, প্র্যাকটিস করলে হয়তো অনর্গল বলতে পারব। দারিদ্র্য আর সইতে পারি না, এখন মরিয়া হয়ে উঠেছি। বাঁচতে চাই, তার জন্যে শয়তানের গোলাম হতেও রাজী আছি।
দিবাকরের হাত ধরে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে গণপতি বলল, ঠিক আছে। শুধু বাঁচলে চলবে না, জীবনটা পুরোপুরি ভোগ করতে হবে। আর একবার বল— বুকের পাটা আছে? বিপদকে অগ্রাহ্য করতে পারবে? ধর্মরূপী জুজুর ভয় ছাড়তে পারবে?
—সব পারব। কিন্তু তুমি তো শাস্ত্রচর্চা করে থাক, গীতাও আওড়াও, তোমার মুখে এসব কথা কেন?
—কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, সর্ব ধর্ম ত্যাগ করে আমার শরণ নাও, যুদ্ধে লেগে যাও। যদি জয়ী হও তো পৃথিবী ভোগ করবে, যদি মর তো স্বর্গলাভ করবে। আমিও তোমাকে সেই রকম উপদেশ দিচ্ছি— সব ছেড়ে দিয়ে আমার বশে চল। যদি জীবনযুদ্ধে জয়ী হও তবে সর্ব সুখ ভোগ করবে। আর যদি দৈবদুর্বিপাকে নিতান্তই হেরে গিয়ে জেলে যাও তবে বীরোচিত গতি লাভ করবে, তোমার দলের সবাই বাহবা দেবে। জেল থেকে ফিরে এসে পুনর্জন্ম পাবে, আবার উঠে পড়ে লাগবে। আজ সন্ধ্যার সময় আমার বাসায় এসো, পাঁচ নম্বর শেওড়াতলা লেন। আমি তোমাকে দীক্ষা দেব, সকল অভাব দূর করব, সর্বপাপেভ্যো রক্ষা করব।
দিবাকর বলল, বেশ, আজ সন্ধ্যায় দেখা করব।