পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
চমৎকুমারী ইত্যাদি

 — আমি একজন কর্মী, হাঁপানির বেয়ারাম আছে তাই হাতে কলমে কাজ করতে পারি না, মুখের কথায় যতটুকু সম্ভব করি। বড় বড় মাতব্বর লোক হচ্ছেন এর নির্বাহসমিতির সভ্য, সভাপতি, সচিব আর উপসচিব। তাঁরা আত্মপ্রকাশ করেন না, আড়ালে থাকেন। আমি হচ্ছি মাৎস্য সংস্কৃতির একজন ব্যাখ্যাতা আর প্রচারক। যারা আমাদের সমাজে ঢুকতে চায় তাদের আমি যাচাই করি, বাজিয়ে দেখি। যদি দীক্ষার উপযুক্ত মনে হয় তবে মাৎস্য সমাজের ফিলসফিও তাদের বুঝিয়ে দিই।

 —ফিলসফিটা কি রকম?

 —গোটা কতক মূল সূত্র বলছি শোন। জোর যার মুলুক তার। উদ্যোগী পুরুষসিংহ অর্থাৎ যোগাড়ে গুণ্ডাকে লক্ষ্মী বরণ করেন। দু-চার জন রোগা-পটকা গুণ্ডা হাজার জন বলবান সজ্জনকে কাবু করতে পারে। দুর্জনরা একজোট হতে পারে কিন্তু সজ্জনরা পারে না, তারা কাপুরুষ, তাদের নীতি হচ্ছে, চাচা আপনা বাঁচা। মাৎস্য সমাজী জনসাধারণের উদ্দেশে বলে— মানতে হবে, মানতে হবে, কিন্তু নিজের বেলায় বলে— মানব না, মানব না। পাপ পুণ্য সব মিথ্যে, শুধু দেখতে হবে পুলিসে না ধরে, আর আত্মীয় বন্ধুরা বেশী না চটে।

 —আমাকে নাস্তিক হতে হবে নাকি?

 —তার দরকার নেই। ভক্তিতে গদগদ হয়ে যত খুশি গুরুভজন করতে পার। ভক্তিচর্চার সঙ্গে মাৎস্য ন্যায়ের বা চুরি ডাকাতি মাতলামি ব্যভিচার ইত্যাদির কোনও বিরোধ নেই।

 —তোমার মাৎস্য ফিলসফিতে নতুন কিছু তো দেখছি না।

 —আরও বলছি শোন। কলেজে তোমার তো অঙ্কে বেশ মাথা ছিল। সম্ভাবনা-গণিত অর্থাৎ প্রবাবিলিটি মনে আছে?