পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মাৎস্য ন্যায়
২৫

 —কিছু কিছু আছে।

 —কলকাতার রাস্তায় যত লোক চলে তাদের মধ্যে জন কতক প্রতি বৎসরে অপঘাতে মারা যায়। সেজন্যে পথে হাঁটা ছেড়ে দিয়েছ কি?

 —তা কেন ছাড়ব। বেশীর ভাগ লোকেই তো নিরাপদে যাতায়াত করে, অতি অল্প লোকেই মরে। আমার মরবার সম্ভাবনা খুবই কম।

 —ঠিক কথা। যারা হাঁটে তাদের তুলনায় যারা মোটর রেলগাড়ি বা এয়ারোপ্লেনে চড়ে তাদের অপঘাতের হার ঢের বেশী। প্রাণের ভয়ে এই সব বর্জন করতে বল কি?

 —কেন বলব। লক্ষ লক্ষ লোকের মধ্যে হয়তো দু-চার জন মারা যায়, কিন্তু তাতে ভয় পেলে চলে না।

 —উত্তম কথা। বিনা টিকিটে যারা রেলে যাতায়াত করে তাদের কত জনের সাজা হয় জান?

 —হয়তো লাখে এক জন ধরা পড়ে, দণ্ড যা দিতে হয় তাও খুব বেশী নয়। কাগজে পড়েছি, গত বৎসরে সাড়ে চার হাজার বার অকারণে শিকল টেনে ট্রেন থামানো হয়েছিল, কিন্তু খুব অল্প লোকেরই বোধ হয় সাজা হয়েছে।

 —অতি সত্য কথা। বিনা টিকিটে রেলে চড়া, শিকল টেনে গাড়ি থামানো, গার্ড আর স্টেশন মাস্টারকে ঠেঙানো খুব নিরাপদ কাজ, রিস্ক নগণ্য। পরীক্ষার প্রশ্ন পছন্দ না হলে ছাত্ররা দাঙ্গা করে, চেয়ার টেবিল ভাঙে। ফেল হলে মাস্টারকে ঠেঙায়। কত জনের সাজা হয়?

 —বোধ হয় কারও হয় না।

 —অর্থাৎ দাঙ্গা করা অতি নিরাপদ। ছেলেরা জানে তাদের