পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উৎকোচ তত্ত্ব
৩৩

আমি হলুম তোমাদের মোহিত পিসেমশাই, বেহালার মোহিত সমজদার। কই রে, পারুল কোথা আছিস, এদিকে আয় না মা।

 হাঁকডাক শুনে লোকনাথ-গৃহিণী পারুলবালা এলেন। আগন্তুক লোকটিকে চিনতে তাঁরও কিছু দেরি হল। তার পর মনে পড়লে প্রণাম করে বললেন, মোহিত পিসেমশাই এসেছেন! উঃ কি ভাগ্যি!

 অগত্যা লোকনাথও একটা নমস্কার করলেন।

 মোহিত সমজদার হাঁক দিলেন, রামবচন, জিনিসগুলো এখানে নিয়ে আয় বাবা। মোহিতবাবুর অনুচর বাইরে অপেক্ষা করছিল, এখন ঘরে এসে মনিবের সামনে চারটে বাণ্ডিল রাখল।

 একটা কার্ড বোর্ড বাক্স পারলেবালার হাতে দিয়ে মোহিতবাবু বললেন, আসল কাশ্মীরী শাল, তোর জন্যে এনেছি, দেখ তোর পছন্দ হয় কিনা।

 শাল দেখে পারুলবালা আহ্লাদে গদ গদ হয়ে বললেন, চমৎকার, অতি সুন্দর।

 মোহিতবাবু বললেন, লোকনাথ বাবাজী, তোমার তো কোনও শখই নেই, শুধু বই আর বই। তাই একটা ওআলনট কাঠের কিতাবদান মানে বুক র‍্যাক এনেছি। আর এই বাক্সটায় কয়েক গজ কাশ্মীরী তাফতা আছে, একটা শাড়ি আর গোটা দুই ব্লাউজ হতে পারবে। আর এই চুবড়িটায় কিছু মেওয়া আছে, পেস্তা বাদাম আখরোট কিশমিশ মনাক্কা এই সব।

 কুণ্ঠিত হয়ে লোকনাথ বললেন, আহা কেন এত সব এনেছেন, এ যে বিস্তর টাকার জিনিস। না না, এসব দেবেন না।

 মোহিতবাবু বললেন, আরে খরচ করলেই তো টাকা সার্থক হয়।