দুদিন পরে মোহিতবাবু আবার এলেন। সঙ্গে তাঁর পত্নী আসেন নি, একজন অচেনা ভদ্রলোক এসেছেন।
মোহিতবাবু বললেন, বাড়ির সব ভাল তো লোকনাথ? ইনি হচ্ছেন শ্রীগিরধারীলাল পাচাড়ী, মস্ত কারবারী লোক, আমার বিশিষ্ট বন্ধু। ইনি একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন।
লোকনাথ ভাবলেন, এইবারে পিসের গোপন কথাটি প্রকাশ পাবে। জিজ্ঞাসা করলেন, কি প্রস্তাব?
—আচ্ছা বাবাজী, তোমার সার্ভিস শেষ হতে আর কত দেরি?
—এখন এক্সটেনশনে আছি, ছ মাস পরেই শেষ হবে।
—তার পর কি করবে স্থির করেছ?
—কিছুই করব না, লেখাপড়া নিয়ে থাকব।
হাত নেড়ে মোহিতবাবু বললেন, নানানানানা, বসে থাকা ঠিক নয়। তোমার শরীর ভালই আছে, মোটেই বুড়ো হও নি, তবে রোজগার করবে না কেন? শাস্ত্রে বলে, অজরামরবৎ প্রাজ্ঞো বিদ্যামর্থঞ্চ চিন্তয়েৎ। তুমি হচ্ছ প্রাজ্ঞ লোক, অর্থ উপার্জনের সঙ্গেই বিদ্যচর্চা করবে। যা বলছি বেশ করে বিবেচনা করে দেখ বাবাজী।
মোহিতবাবু তাঁর মাথাটি এগিয়ে দিয়ে বিশ্বস্তভাবে নিম্নকণ্ঠে বললেন, এই গিরধারীলাল পাচাড়জী হচ্ছেন সিকিম স্টেটের মস্ত বড় কনট্রাক্টার। পশম কম্বল কাঠ মৃগনাভি বড় এলাচ চিরেতা মাখন ঘি এই সব জিনিস ওখান থেকে এদিকে চালান দেন, আবার সুতী কাপড় চাল গম তেল চিনি নুন কেরোসিন প্রভৃতি ওখানে সপ্লাই করেন। সিকিমের আমদানি রপ্তানি এঁরই হাতে, মহারাজও এঁকে খুব খাতির করেন, নানা বিষয়ে পরামর্শ নেন। মহারাজ এঁকে বলেছেন,—বলুন না গিরধারীবাবু, নিজেই বলুন না।
গিরধারী বললেন, শুনুন হজুরে। মহারাজ তাঁর বড় আদালতের