গোলমাল শুনে মাষ্টাররা সবাই আমাদের ক্লাসে এলেন। হেডমাষ্টার মশাই বললেন, বাড়ি যা তোরা।
পরদিন থেকে মধু মাষ্টার গোবেচারার মতন বিনা বেতেই পড়াতে লাগলেন।
ছ মাস পরেই কুঞ্জর সঙ্গে মধু মাষ্টারের একটা পাকা রকম মিটমাট হয়ে গেল। রেল স্টেশনের মালবাবু যামিনী ঘোষাল ছিলেন কুঞ্জর দূর সম্পর্কের ভাই, তাঁর সঙ্গে মধু মাষ্টারের বৈমাত্র বোন ভুতির বিয়ে স্থির হল। মধু মাষ্টার যথাসাধ্য আয়োজন করলেন, অনেক লোককে নিমন্ত্রণ করলেন, কিন্তু হঠাৎ সব ওলটপালট হয়ে গেল। বিবাহসভায় সবাই বরের জন্যে অপেক্ষা করছে, এমন সময় বরপক্ষের একজন খবর আনল— যামিনী বলেছে, মধু চামারের বোনকে সে কিছুতেই বিয়ে করবে না। কেষ্ট আমাদের চুপিচুপি বলল, কুঞ্জই ভাঙচি দিয়েছে।
বিয়েবাড়িতে প্রচণ্ড হইচই উঠল। মধু মাষ্টারের বিমাতা কুঞ্জর মায়ের পায়ে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, রক্ষা কর দিদি এখন বর কোথায় পাব, তোমার ছেলে কুঞ্জকে আদেশ কর।
কুঞ্জর মা বললেন, নিশ্চয় নিশ্চয়, বামনের জাতধর্ম বাঁচাতে হবে বইকি। এই কুঞ্জ, তোর ময়লা কাপড়টা ছেড়ে এই চেলিটা পর।
কুঞ্জ বলল, ভুতি যে বিচ্ছিরি!
তার মা বললেন, আহা, কি আমার কাত্তিক ছেলে রে! ওঠ বলছি, নয়তো মেরে হাড় গুঁড়ো করে দেব।
কুঞ্জর বাবা বললেন, ছেলেটার যখন আপত্তি তখন জোর করে বিয়ে দেবার দরকার কি?