পাতা:চমৎকুমারী ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
চমৎকুমারী ইত্যাদি

 জীবনকৃষ্ণ প্রশ্ন করলেন, হয়েছে কি?

 জয়গোপাল। হয়েছে আমার মাথা। কিছুদিন ধরে একটা ফিসফিস গুজগুজ শুনছিলাম দীনেশ নাকি আবার বিয়ে করবে। তার মেয়ে তো কেঁদেই অস্থির। বলেছে, সৎমায়ের কাছে থাকব না, এখনই আমার বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দাও। ছোট ছেলেটা বলেছে, ব্যাট দিয়ে নতুন মায়ের মাথা ফাটিয়ে দেব। তাদের পিসী আমার স্ত্রী বলেছেন, সৎমায়ের কাছে যেতে হবে না, তোরা আমার কাছেই থাকবি। আমি গুজবে বিশ্বাস করি নি, কিন্তু দীনেশ এই চিঠিতে খোলসা করে লিখেছে।

 গোলোক। একটু শোনাও না কি লিখেছে।

 জয়গোপাল। চার পাতায় বিস্তর লিখেছে। তার বক্তব্যের যা সার তাই পড়ছি শোন।—শিবনাথের ছোট শালী চামেলীর গুণের তুলনা হয় না। আমার ইনফ্লুএঞ্জার সময় যে সেবাটা করেছে তা বলবার নয়। সকলের মুখে এক কথা—চামেলীই আমাকে বাঁচিয়েছে। শিবনাথ নাছোড়বান্দা হয়ে আমাকে ধরে বসল, চামেলীকে নাও, সে তো তোমারই। সুন্দরী নয় বটে, কিন্তু কুশ্রীও বলা চলে না। তার বয়স চব্বিশের মধ্যে, একটু বেশী তোতলা, তাই এ পর্যন্ত বিয়ে হয় নি। আমার বিশ্বাস ডাক্তার অনিল মিত্র তাকে সারাতে পারবেন। তার বাবা সম্প্রতি মারা গেছেন, তাঁর উইল অনুসারে চামেলী প্রায় দশ হাজার টাকার সম্পত্তি পেয়েছে। আমার নিজের বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে চুলে একটু পাকও ধরেছে, কিন্তু এখানে সবাই বলছে, আমাকে নাকি চল্লিশের কম দেখায়। অগত্যি রাজী হলুম। দেখি, ভগবানের দয়ায় আবার সংসার পেতে যদি একটু শান্তি পাই।...এই রকম অনেক কথা দীনেশ লিখেছে। বুড়ো বয়সে বিয়ে করতে লজ্জাও হল না! ছি ছি ছি!