পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চয়নিকা
৪৬১

যবে দেখা দেয় সেবা-মাধুর্যে ছোঁওয়া
তখন সে হয় কী অনির্বচনীয়।
বুঝি অনুমানে চোখে কৌতুক ঝলে,
ভাবিছ বসিয়া সহাস-ওষ্ঠাধরা
এ সমস্তই কবিতার কৌশলে
মৃদুসংকেতে মোটা ফরমাশ করা।
আচ্ছা, না হয় ইঙ্গিত শুনে হেসো,
বরদানে, দেবী, না হয় হইবে বাম,
খালি হাতে যদি আসো, তবে তাই এসো,
সে দুটি হাতেরও কিছু কম নহে দাম।
সেই কথা ভালো, তুমি চলে এসো একা
বাতাসে তোমার আভাস যেন গো থাকে,
স্তব্ধ প্রহরে দুজনে বিজনে দেখা,
সন্ধ্যাতারাটি শিরীষ ডালের ফাঁকে।
তার পরে যদি ফিরে যাও ধীরে ধীরে
ভুলে ফেলে যেয়ো তোমার যূথীর মালা,
ইমন বাজিবে বক্ষের শিরে শিরে
তার পরে হবে কাব্য লেখার পালা।
যত লিখে যাই ততই ভাবনা আসে
লেফাফার ’পরে কার নাম দিতে হবে,
মনে মনে ভাবি গভীর দীর্ঘশ্বাসে
কোন্ দূর যুগে তারিখ ইহার করে।
মনে ছবি আসে,—ঝিকিমিকি বেলা হোলো,
বাগানের ঘাটে গা ধুয়েছ তাড়াতাড়ি;
কচি মুখখানি বয়স তখন ষোলো,
তমু দেহখানি ঘেরিয়াছে ডুরে শাড়ি।
কুঙ্কুম-ফোঁটা ভুরু-সংগমে কিবা,
শ্বেতকরবীর গুচ্ছ কর্ণমূলে,